নীলফামারী: তীব্র গরম আর ঘনঘন লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। তীব্র তাপদাহের সঙ্গে দিনরাত লোডশেডিংয়ে কষ্টে সময় কাটাচ্ছে মানুষ।
চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ঘুমও হারাম হয়ে গেছে পাখা তৈরির কারিগরদের। কারিগররা এখন দিনরাত সমান তালে পাখা তৈরির কাজে ব্যস্ত। প্রতিটি হাতপাখা খুচরা বাজারে ৮০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে বাসযাত্রী, হাটবাজারের খুচরা ব্যবসায়ী ও দরিদ্র মানুষের কাছে এই পাখার চাহিদা বেশি।
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের পাঠানপাড়া এলাকার গৃহবধূ সাফিয়া বেগম বলেন, বাড়িতে বসে না থেকে তালপাতার হাতপাখা তৈরি করছি। অন্য বছরের চেয়ে এ বছর দাম বেশি। তার মতো এলাকার অনেকেই এ কাজ করে ভালো টাকা আয় করছেন।
সৈয়দপুর বাজারের সবজি ব্যবসায়ী বাবলু বলেন, তীব্র গরমে জীবন অতিষ্ঠ। তাই একটি হাতপাখা কিনেছি। গরম থেকে কিছুটা স্বস্তিতো পাওয়া যাবে। বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলায় এই পাখা কাজে দিচ্ছে।
সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের মুনিপাড়ার আমু হোসেন (৫৬) বলেন, প্রচণ্ড গরমে বাইরে বেরুতে পারছি না। ফলে বার বার মাথা পানিতে ধুয়ে নিচ্ছি। আর ঘরে বসে হাত পাখা চালিয়ে সময় কাটাচ্ছি।
হাতপাখা বিক্রেতা রবিউল ইসলাম জানান, প্রতি বছর গরম মৌসুমে বিভিন্ন হাট-বাজারে হাতপাখা বিক্রি করেন তিনি। এ বছর বেশি বিক্রি হচ্ছে। দু’বেলা খেয়ে এবার এনজিও থেকে নেওয়া ঋণও শোধ করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি। কারণ প্রচণ্ড রোদে পাখার চাহিদা বেড়েছে কয়েক গুণ।
লোডশেডিং আর প্রচণ্ড গরমের কারণে শহর-গ্রাম সর্বত্রই হাতপাখার কদর বেড়েছে। তবে শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলের লোডশেডিং বেশি হওয়ায় গ্রাম-গঞ্জে হাতপাখার কদর সবচেয়ে বেশি। সহনীয় তাপমাত্রায় বেড়েছে হাতপাখার চহিদা। বাজারে নানা ধরনের হাত পাখার বিক্রি বেড়েছে। যেমন- তাল পাতার পাখা, রঙিন সুতার পাখা, রঙিন কাপড়ের পাখা মিলছে ৫০-২০০ টাকায়।
সৈয়দপুরের খাতামধুপুর ইউনিয়নের খালিশা গ্রামের গৃহবধূ রাশিদা জানান, আমাদের মতো গরিব মানুষের কোনো উপায় নেই। তবে একটু বেশি সময়ে হাতপাখা নাড়াতে গেলে হাত ব্যথা হয়ে যায়। তারপরও কিছু করার নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২৪
এসএম