ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

৫৪ মণের ‘মানিক’ প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে চান হামিদা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৭ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০২৪
৫৪ মণের ‘মানিক’ প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে চান হামিদা মাতৃস্নেহে ‘মানিক’কে লালনপালন করেছেন হামিদা

টাঙ্গাইল: নাম তার মানিক। নামটি কোনো ব্যক্তির নয়।

এটি গত ৩ বছর ধরে কোরবানির হাটে বিক্রি না হওয়া অস্ট্রেলীয় ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়। বিশালাকৃতির এই মানিকের ওজন ৫৪ মণ, এর মালিকের নাম হামিদা আক্তার।  

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটি ইউনিয়নের ভেঙ্গুলিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদের বাড়িতে ষাঁড়টিকে লালনপালন করছেন হামিদা।

এবার মানিককে হাটে নিয়ে বিক্রি করতে চান না হামিদা। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে এ ষাঁড় উপহার দিতে চান।  

হামিদা বলেছেন, এবার প্রধানমন্ত্রী যদি আমার মানিককে না নেন তাহলে তার আর কোনো গতি থাকবে না।

এর আগে ২০২১ সালে ৩৬ মণ ওজন হয়েছিল মানিকের, দাম হাঁকানো হয়েছিল ১৪ লাখ টাকা। কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় সেবার বিক্রি করেননি।  

সবশেষ গত বছরের কোরবানি ঈদে গাবতলীর হাট কাঁপায় ৫২ মন ওজনের এই মানিক। দাম চাওয়া হয় ১৫ লাখ টাকা। কিন্তু সেবারও ফেরত আনা হয় মানিককে। বাড়িতে এক ক্রেতা মানিকের দাম ১০ লাখ টাকা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাতে রাজি হননি তিনি।  এখন সেই মানিককে নিয়েই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি ও তার পরিবারের লোকজন।

মানিককে ঘর থেকে বের করছেন হামিদার বাবা

প্রতিদিন মানিককে সাবান-শ্যাম্পু দিয়ে গোসল, সময়মতো খাওয়াতে হয়। গত ৮ বছর ধরে এভাবেই মানিককে মাতৃস্নেহ দিয়ে লালনপালন করছেন হামিদা ও তার পরিবার।

প্রতিবেশীরা জানান, করটিয়া সা’দত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিভাগ থেকে অনার্স শেষ করেন হামিদা আক্তার। স্বপ্ন সফল নারী উদ্যোক্তা হবেন। চাকরি না করে নারী উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে গত ৮ বছর ধরে গরু লালনপালন শুরু করেন। দুটি গাভী কেনেন। সেই গাভী দুটি বাছুরের জন্ম দেয়, তাদের নাম রাখেন মানিক ও রতন। দুই বছর আগে রতনকে বিক্রি করতে পারলেও রয়ে যায় মানিক। প্রতিদিন দানবাকৃতির ষাঁড়টির খরচ মেটাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে হামিদাকে। তার মা মারা গেছেন ছয় মাস আগে। বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে হামিদার সংসার।  

হামিদার বাবা জানান, ছেলে না থাকায় এবং তিনি বৃদ্ধ হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই হামিদা তার কাজে সহযোগিতা করে আসছেন। এখন নানা অসুখে পড়ে বেশি দুর্বল হয়ে পড়েছেন। তাই বড় মেয়ে হামিদাকেই সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। বাকি দুই মেয়ের একজনকে বিয়ে দিয়েছেন, অন্যজন নার্সিংয়ে পড়ছে। সন্তানদের সুশিক্ষিত করার ইচ্ছে তার।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শহীদুজ্জামান জানান, বিশাল আকৃতির এই ষাঁড়টি গত কয়েক বছর ধরে বিক্রি করতে পারছেন না হামিদা। এতে করে দিন দিন ষাঁড় গরুটির ওজন বাড়ছে। ওজন প্রায় দুই হাজার একশত কেজি।  

বাংলাদেশ সময়: ২১১৭ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০২৪
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।