সাভার (ঢাকা): সাভারের আশুলিয়ায় এক প্রেমিকের অতর্কিত হামলায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে একই প্রেমিকার অপর প্রেমিক । একই ঘটনায় আহত হয়েছেন ওই প্রেমিকের চাচা।
গত ৩০ জুন দুপুর ১২টার দিকে আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নের মোকামটেক এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- ধামরাই থানার চৌঠাইল গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে রনি মোল্লা (২০) ও তার চাচা মো. ফিরোজ মোল্লা। তারা দুজনেই সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ থানার আজলাবাদ পশ্চিমপাড়ার মো. তাসিবুল ইসলাম ছেলে মো. আসাদুল ইসলাম (১৫)। সে সাভার সোবাহানবাগ ওয়াপদা রোড জালাল উদ্দিনের বাড়ির ২য়তলার ভাড়াটিয়া। অপরজন চাঁদপুর জেলার মো. মিজানুর রহমানের ছেলে মো. জিহাদ হোসেন (১৬)। সে সাভার সবুজবাগ আশরাফুলের বাড়ির ২য়তলার ভাড়াটিয়া এবং মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার নবদিয়া গ্রামের মো. চাঁন মিয়ার ছেলে মো আজিজুল ইসলাম (১৭)। সে রেডিও কলোনি জামসিং সোলার মার্কেট এলাকায় থাকে।
বুধবার (০৩ জুলাই) দুপুরে আশুলিয়া থানায় একটি প্রেস ব্রিফিং করে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ হিল কাফী।
তিনি বলেন, ৪/৫দিন পূর্বে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অজ্ঞাতনামা একটি মেয়ের সঙ্গে রনি মোল্লার পরিচয় হয়। তাদের মধ্যে মেসেঞ্জারে কথাবার্তার একপর্যায় সেই মেয়েটি দেখা করার জন্য বলে। সেই সুবাদে রনি গত রোববার চাচা ফিরোজ মোল্লাকে নিয়ে পাথালিয়ার মোকামটেক এলাকায় আসে। কিন্তু সেই মেয়ে কয়েকটি স্থানে থাকার কথা বলে আর দেখা করেনি। পরে রনি ও তার চাচা ফিরোজ মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করে। দুপুর ১২টার দিকে মোকামটেক মীর আলীর বাড়ির সামনে এসে পৌঁছলে আগে থেকেই ওত পেতে থাকা ৩/৪ জন কিশোর তাদের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। সেসময় ফিরোজ মোল্লা ও রনি মোল্লাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে তারা। পরে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এঘটনায় আহতদের চাচা মামলা দায়ের করলে আশুলিয়ার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আসাদুল ইসলাম, জিহাদ ও আজিজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আসাদুল ইসলাম ও রনি মোল্লা দুজনে পূর্ব পরিচিত ছিল। কিন্তু মেয়েটির সাথে প্রথমে আসাদুল ইসলামের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। পরবর্তীতে সেই মেয়েটি আবার রনি মোল্লার সাথেও কথাবার্তা শুরু করে। পরে রনি মোল্লার সঙ্গে মেয়েটির যোগাযোগের বিষয়টি আসাদুল জানতে পারে। সেই নিয়ে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এতে করে পূর্বশত্রুতার জের ধরে তাদের ওপর হামলা চালিয়ে ছুরিকাঘাত করেছে আসাদুল ও তার সহযোগীরা।
মামলার তদন্তে থাকা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক আশরাফুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, গ্রেপ্তাররা সবাই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের তথ্য অনুযায়ী মেয়েটির সঙ্গে আসাদুল ইসলামের কয়েকমাস পূর্বে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মেয়েটি পড়াশোনা না জানার সুবাদে ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড নিয়ে নেয় আসাদুল। এর পর থেকে মেয়েটির ফেসবুক এক্সেস নিয়ে ফেসবুক পর্যবেক্ষণ করে আসাদুল। তবে মেয়েটির সঙ্গে রনি ফেসবুক যোগাযোগ হলে সেটি আসাদুল দেখতে পায়। সেই ক্ষোভ থেকে মেয়েটির আইডি ব্যবহার করে পরিকল্পিতভাবে রনিকে দেখা করার কথা বলে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী রনি ও তার চাচাকে মারধর ও ছুরিকাঘাত করে আহত করে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, জুলাই ৩, ২০২৪
এসএএইচ