ঢাকা: রাজধানীর মহাখালী থেকে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. মামুন হোসেন, আবু বক্কর ও হাসিবুল ইসলাম।
বুধবার (৩ জুলাই) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তার করে সিটিটিসির কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকার করেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার মামুন হোসেন জানান, তিনি অনলাইনে মুফতি জসিমউদ্দিন রহমানী ও তামিম আল আদনানির বক্তব্য শুনে উগ্রবাদের দিকে আকৃষ্ট হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ অনলাইনে বিভিন্ন আইডির সঙ্গে যুক্ত হয়ে আনসার আল ইসলামের হয়ে কাজ শুরু করেন।
সংগঠনের সদস্য নাজমুল হাসান ওরফে ওসমান ও আবু কায়সার ওরফে রনির সঙ্গে মামুনের অনলাইনে নিয়মিত যোগাযোগ হয়। রনি মামুনকে জানান, পটাশিয়াম নাইট্রেট দিয়ে বিস্ফোরক বা বোমা বানানো যায়। সেই সঙ্গে আলিবাবা ই-কমার্স সাইট থেকে অর্ডার করার জন্যও মামুনকে নির্দেশনা দেন।
ডিসি ফারুক হোসেন বলেন, নাশকতার পরিকল্পনা নিয়ে একত্রিত হলে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে এবং নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গেন্ডারিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। এ ঘটনার সহযোগী নাহিদ ফেরদাউস, মালয়েশিয়ায় এবং জ্যাক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করায় তখন তাদের চিহ্নিত কিংবা গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
ওই ঘটনার পর মামুন গ্রেপ্তার হয়। পরে কারামুক্ত হয়ে ২ জুলাই অপর গ্রেপ্তার আবু বক্করের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। মামুন আবু বক্করকে সংগঠনের নাহিদ ফেরদাউসের বিষয়ে বলেন এবং নাহিদের সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর ও হোয়াটস অ্যাপ নম্বর দেন। আবু বক্কর কারাগার থেকে জামিনে বের হয়ে অনলাইনে নাহিদ ফেরদাউসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। নাহিদ ফেরদাউস সংগঠনের জন্য বিদেশ থেকে আবু বক্করের কাছে নিয়মিত অর্থ পাঠান।
আবু বক্কর এ অর্থ সংগঠনের কাজে ব্যবহার করেন। নাহিদ ফেরদাউস সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য জ্যাকের সঙ্গে আবু বক্করকে পরিচয় করিয়ে দেন এবং জ্যাক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছে বলে জানান। জ্যাক আনসার আল ইসলামে নিয়মিত অর্থায়ন করেন।
ডিসি মিডিয়া ফারুক বলেন, হাসিবুল ইসলামকে আনসার আল ইসলামের দাওয়াত দেন আবু বক্কর। তিনি নাহিদ ফেরদাউস ও জ্যাকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। হাসিবুল ইসলাম নাহিদ ফেরদাউস ও জ্যাকের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করেন। জনশক্তি রপ্তানির আড়ালে আনসার আল ইসলাম সংগঠনের সদস্যদের বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে এবং দেশে আনসার আল ইসলামের নেটওয়ার্ক স্থাপন করে। বিদেশে অবস্থানরত সংগঠনের সদস্যরা বাংলাদেশে নাশকতার পরিকল্পনা করেন।
গ্রেপ্তার আসামিরা তাদের পলাতক সহযোগীদের নিয়ে বাংলাদেশের অখণ্ডতা, সংহতি, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করার নিমিত্তে সরকার ও রাষ্ট্রের জননিরাপত্তা বিঘ্ন ও ক্ষতিসাধনের ষড়যন্ত্র করছিলেন। তারা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করার উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থলে মিলিত হন।
তাদের নামে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, জুলাই ৩, ২০২৪
এসজেএ/আরএইচ