ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কারফিউ শিথিলে স্বস্তি ফিরেছে দক্ষিণাঞ্চলে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২৪
কারফিউ শিথিলে স্বস্তি ফিরেছে দক্ষিণাঞ্চলে

বরিশাল: কারফিউ শিথিল হওয়ায় ব্যাংক, অফিস-আদালতের পাশাপাশি দোকানপাট খোলায় নগরবাসী দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

বুধবার (২৪ জানুয়ারি) বরিশাল নগরে সকাল ৯টা থেকে এবং নগর ব্যতিত জেলার অন্যান্য জায়গাতে সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল রয়েছে।

ফলে সকাল ৯টা থেকে নগরের প্যাডেল রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশা ও থ্রি-হুইলার চলাচল স্বাভাবিক নিয়মে শুরু হয়েছে। সে সঙ্গে জেলার অভ্যন্তরে ও বাইরে বাস চলাচলও শুরু হয়েছে আগের নিয়মে। সবমিলিয়ে রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল বেড়েছে কয়েকগুণ।

বরিশাল নগরের নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের শ্রমিকরা জানান, মঙ্গলবার বরিশাল নগরে বেলা ১১টা থেকে এবং নগর ব্যতিত জেলার সব উপজেলায় সকাল ১০টা থেকে কারফিউ শিথিল ছিল। এ সময়ের মধ্যে স্বল্প পরিসরে দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ রুটে বাস-মিনিবাস চলাচল করলেও বুধবার সকাল থেকে অনেকটাই স্বাভাবিক নিয়মে বাস-থ্রিহুইলার চলাচল করছে। আর গণপরিবহনগুলোতে যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার বিআরটিসির ডিপো থেকে ২২টি রুটে চলাচলকারী কোন বাস চলাচল না করলেও বুধবার বেশ কয়েকটি রুটে বাস চলাচল শুরু হয়েছে।

অপরদিকে গত ২১ জুলাই থেকে বরিশালসহ সারা বাংলাদেশের নৌ পরিবহন ব্যবস্থাও বন্ধ আছে। বুধবার সকাল ১০টা পর্যন্ত বরিশাল নদী বন্দর থেকে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার রুটে কোনো লঞ্চ চলাচল না করলেও বরিশাল-ভোলা ও বরিশাল-মেহেন্দিগঞ্জ রুটে স্পিডবোট চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।  সে সঙ্গে নদীবেষ্টিত বরিশালের হিজলা, মেহেন্দিগঞ্জ ও ভোলা সদরের মানুষ বিভাগীয় সদর দপ্তরের সঙ্গে ছোট ইঞ্জিনচালিত নৌকা (ট্রলার) এরমাধ্যমে যাতায়াত করছে।

বিআইডব্লিউটির বরিশাল নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী পরিচালক রিয়াদ হোসেন জানান, এখন পর্যন্ত লঞ্চ চলাচলের সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষ দেয়নি, তবে সিদ্ধান্ত দিলে তাৎক্ষণিক লঞ্চ চলাচল শুরু হবে।  এছাড়া দিনের বেলা কারফিউ শিথিল থাকলেও সন্ধ্যা ৬টার পর কারফিউ বহাল থাকায় রাতে বরিশাল-ঢাকা রুটে বিলাসবহুল লঞ্চগুলো চলাচল করবে কি না এ নিয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন কোম্পানিগুলো।

এদিকে সকাল ১০টা থেকে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা দোকান-পাটসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান খুলতে শুরু করে।

অপরদিকে সকাল ১০টার দিকে ব্যাংক, অফিস ও আদালত পাড়ায় মানুষের ভিড় দেখা গেছে। চলতি সপ্তাহের প্রথম খোলার দিনে জমে যাওয়া কাজের চাপ বেশি থাকবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। তবে সর্বোচ্চ গ্রাহক ও নাগরিক সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে সরকারি ও বেসরকারি সেক্টরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।  যদিও বরিশালের সর্বত্র ইন্টারনেট ব্যবস্থা সচল না হওয়ায় ব্যবসায়িক কার্যক্রম সঠিকভাবে করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

অপরদিকে কারফিউ শিথিল থাকলেও এ সময়ে কোনো ধরনের মিছিল-সভা, সমাবেশ করা যাবে না বলে জানিয়েছেন এদিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. জিহাদুল কবির ও জেলার পুলিশ সুপার ওয়াহিদুল ইসলাম। সে সঙ্গে নগর ও জেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবি’র সদস্যরা সকাল থেকে টহল দিচ্ছে।  এছাড়া নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়গুলোতে বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

এদিকে হামলা-গ্রেপ্তারসহ নানা শঙ্কায় থাকা বিভিন্ন বাসা-বাড়ি ও মেসে আটকে পড়া বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। বুধবার সকালে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী বিভিন্ন গণপরিবহনে করে যাত্রা করেছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের এক শিক্ষার্থী।  

তিনি জানান, গত শুক্রবার দিনগত রাত ২টার পর কারফিউর মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে শিক্ষার্থীরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশেসহ নগরের বিভিন্ন বাসা ও মেসে অবস্থান করছেন।  হল থেকে বের করে দেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার একটি বাড়িতে তিনিসহ কয়েকজন ছিলেন। তবে অজ্ঞাত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বরিশাল মেট্রোপলিটনের বন্দর থানায় মামলা হয়েছে। খবর চাউর হয়, যে কোন সময় বাসা-বাড়ি ও মেসে অভিযান করা হবে। সে সঙ্গে বাড়ির মালিকদের থানায় নিয়ে যাওয়া হলে গ্রেপ্তার আতঙ্কে কেউই নিরাপদবোধ করছিল না। এদিকে কারফিউ থাকায় তেমন একটা যানবাহন চলাচল না করায় ঝুঁকি নিয়ে বাড়িও যাওয়ার সাহস পায়নি কেউ। তবে বুধবার সকালে তিনিসহ সবাই বাড়ির উদ্দশে রওনা দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২৪
এমএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।