সিরাজগঞ্জ: উল্লাপাড়ায় অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারে জন্য বীর নিবাস নির্মাণ প্রকল্পের দরপত্র দেওয়া হয়। পরে মূল্যায়ন কমিটির মাধ্যমে ঠিকাদার নির্বাচিত হওয়ার পরও পুনঃদরপত্র আহ্বান করায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও), জেলা ত্রাণ কর্মকর্তাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে।
রোববার (২৮ জুলাই) সকালে সিরাজগঞ্জ যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন মেসার্স আলিফ এন্টার প্রাইজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক আলিফ বিন আশরাফ।
আশরাফ উল্লপাড়ার পশ্চিমপাড়া মহল্লার আলী আশরাফ বুলবুলের ছেলে।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও), উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও), উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ও উল্লাপাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখাকে।
সিরাজগঞ্জ যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতের ব্রেঞ্চ সহকারী মনিরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আদালতের বিচারক বেগম সুপ্রিয়া রহমান মামলাটি আমলে নিয়ে বিবাদীদের আগামী ২০ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং পূণঃদরপত্র গ্রহণের ওপর স্থিতাবস্থা জারির আদেশ দেন।
মামলায় বাদী পক্ষ উল্লেখ করেন, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্পের আওতায় উল্লাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ (বীর নিবাস) প্রকল্পের জন্য জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় থেকে দরপত্র আহ্বান করেন। পরে ২০২২ সালে ১০মে দরপত্র দাখিল করে বাদীর প্রতিষ্ঠান আলিফ এন্টারপ্রাইজ। যাচাই-বাছাই শেষে লটারির মাধ্যমে ওই বছরের ১৭মে আলিফ এন্টারপ্রাইজকে ঠিকাদার নির্বাচিত করে চিঠি দেয় দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি। পরবর্তীতে জামানতের টাকা পে-অর্ডার আকারে ১নম্বর বিবাদী (উপজেলা নির্বাহী অফিসার) বরাবর দাখিল করেন। শর্ত মোতাবেক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ বুঝিয়ে দিয়ে ৩০০ টাকা মূল্যের নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তিনামা সম্পাদন করার কথা। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের টেন্ডারপ্রাপ্ত ৪১-৪৮ ক্রমিকের কাজের চুক্তি সম্পাদন না করে তৃতীয় পর্যায়ে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। সোমবার (৩০ জুলাই) দরপত্র গ্রহণের শেষ দিন এবং দুপুর ২টায় দরপত্র খোলার তারিখ ও সময় নির্ধারণ করা হয়। ফলে বাদীর দ্বারা কাজ সম্পন্ন না করে তৃতীয় দফায় টেন্ডার আহ্বান করায় তার অপূরণীয় ক্ষতির হয়েছে। এ কারণে তৃতীয় পর্যায়ে বীর নিবাস প্রকল্পটি অবৈধ টেন্ডার বেআইনি ঘোষণা করে ডিক্রি দেওয়ার আবেদন জানানো হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আবুল কালাম আজাদকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান বলেছেন, বীর নিবাস নিয়ে আমাদের সংশ্লিষ্টতা নেই। বরাদ্দ দেওয়া হয় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে। সহায়তা করে পিআইও অফিস। মামলায় আমাকে বিবাদী করা হলো কেন বলতে পারবো না।
উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সানজিদা সুলতানা বলেন, ২০২২ সালে যখন দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল তখন মেসার্স আলিফ এন্টার প্রাইজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিল। কিন্তু সে সময় আমরা প্রকল্পের বরাদ্দ পাইনি। যে কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করা হয়নি। সময়ও পার হয়েছে। এখন নতুন করে প্রকল্পের বরাদ্দ পেয়েছি তাই নতুন টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। আদালতের আদেশ এখনও হাতে পাইনি। পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২৪
এসএম