ঢাকা, সোমবার, ৮ আশ্বিন ১৪৩১, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

লিবিয়ায় পাচারের শিকার সালামকে উদ্ধার করল পিবিআই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪
লিবিয়ায় পাচারের শিকার সালামকে উদ্ধার করল পিবিআই

যশোর: লিবিয়ায় পাচারের শিকার যশোরের এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। উদ্ধার হওয়া সৈয়দ আব্দুস সালাম (৪২) যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার খলসি গ্রামের মৃত সৈয়দ তোজাম্মেল হোসেনের ছেলে।

দেশে ফেরার পর রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) যশোরের মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন ট্রাইব্যুনালে তার জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে।

পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন বলেন, সৈয়দ আব্দুস সালামকে পাচারের মামলাটি আদালতের নির্দেশে তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। তদন্তকারী কর্মকর্তা জানতে পারেন ভিকটিম সালাম লিবিয়াতে আটক আছে। তখন বিদেশে থাকা মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য আসামি নওয়াব আলী সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করা হয়। এরপর নওয়াব আলী ভিডিওকলের মাধ্যমে ভিকটিম সালামের সঙ্গে তদন্তকারী কর্মকর্তার কথা বলিয়ে দেয়। নওয়াব আলী ভিকটিম সালামকে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করে। পিবিআই যশোরের সার্বিক প্রচেষ্টায় ভিকটিম সালাম দেশে ফেরত আসে। ভিকটিমকে বিজ্ঞ আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার জন্য রোববার আদালতে উপস্থাপন করা হয়। তিনি ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক জবানবন্দি দেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম  সৈয়দ আব্দুস সালাম পেশায় একজন কৃষক। পরিবারিক সচ্ছলতার জন্য তিনি বিদেশ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ভিকটিমের প্রতিবেশী আসামি নওয়াব আলী বিষয়টি জানতে পেরে ভিকটিমকে রোমানিয়ায় পাঠাতে পারবে বলে জানায়। তখন ভিকটিম তার পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে রোমানিয়ায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে নওয়াব আলী ভিকটিমকে জানায় তাকে রোমানিয়ায় না, ইতালি পাঠাতে পারবে। তখন তার কথামতো ভিকটিমের সঙ্গে আসামি নওয়াব আলীর চার লাখ টাকার চুক্তি হয় এবং চুক্তি অনুযায়ী টাকা নিয়ে আসামি নওয়াব আলী ভিকটিমকে ২০২৩ সালের ২২ মার্চ ঢাকা বিমানবন্দরে দিয়ে দুবাই নিয়ে যায়। সেখানে দুদিন অবস্থান করার পর মিশরে পাঁচ ঘণ্টা বিরতির পর লিবিয়া নিয়ে একটি বাসায় ভেতরে আটক রাখে। সেখান থেকে ২০ থেকে ২২ দিন পর নওয়াব আলী ভিকটিমকে ইটালি পাঠানোর জন্য অপরিচিত কিছু লোকের কাছে পাঠায়। তখন তারা ভিকটিমকে আসামি নাদিম ও আসামি হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলে। ভিকটিম তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং পরে আসামিরা ভিকটিমকে একটি অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখে।

ভিকটিমকে আটকে রেখে আসামিরা মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশে তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। ভিকটিমকে নির্যাতন করে তার পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় ১৫ লাখ টাকা আদায় করে। এরপরও তারা ভিকটিমকে মুক্ত করে দেয়নি। তখন তার পরিবারের লোকজন বুঝতে পারে ভিকটিম কোনো মানবপাচার চক্রের হাতে জিম্মি হয়ে আছে। তাকে উদ্ধারের জন্য ২০২৪ সালের ২ মে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয় পিবিআইকে। এরপর পিবিআই তদন্তের এক পর্যায়ে ভিকটিমকে দেশে ফেরত আনতে সক্ষম হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪
ইউজি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।