ঢাকা: অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক যুগ্ম সচিবের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে বদলি এবং নন-ক্যাডার পদ থেকে উচ্চ পদে (সহকারী সচিব, সিনিয়র সহকারী সচিব, উপসচিব, যুগ্মসচিব) পদ সংরক্ষণের দাবিতে সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেছেন শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) সচিবালয়ে ৬ নম্বর ভবনের নিচে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শেষে সেখানে সমাবেশ করেন তারা।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগের (এপিডি) অতিরিক্ত সচিব মো. ওবায়দুর রহমানের কক্ষের সামনে অবস্থান নেন। এসব কর্মচারী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে হট্টগোল করেন। তারা অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. নাদিরা সুলতানার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
এরপর আজ বুধবার সকালে তারা সচিবালয় চত্বরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের বিক্ষোভ মিছিল পুরো সচিবালয় প্রদক্ষিণ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। একই সঙ্গে বৃহস্পতিবার আবারও বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দিয়ে তারা ফিরে যান।
এ বিষয়ে সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি মো. বদিউল কবীর বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান ও আসলাম অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব নাদিরা সুলতানার কাছে যান। তখন তিনি আমাদের দুজন প্রশাসনিক কর্মকর্তার সাথে দুর্ব্যবহার করেন এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।
তিনি বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান তৎক্ষণাৎ অসুস্থ হয়ে অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন এবং তিনি ঘটনাস্থলেই দুইবার বমি করেন। এ অবস্থার পূর্বে তিনি পানি পান করতে চাইলে তাকে পানি পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। এ খবর পেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগের কর্মচারীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং চিকিৎসার জন্য অচেতন অবস্থায় উক্ত কর্মকর্তার অফিস কক্ষ থেকে উদ্ধার করে সচিবালয় ক্লিনিকে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি পরিলক্ষিত হওয়ায় ডাক্তার পরামর্শ অনুযায়ী দ্রুত সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বদিউল কবীর বলেন, এরূপ অসদাচরণের জন্য এবং সচিবালয়ের শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার ষড়যন্ত্র হিসেবে গণ্য করে বিশৃঙ্খলার দায়ে অর্থ বিভাগের যুগ্মসচিব ড. নাদিরা সুলতানাকে অবিলম্বে সচিবালয় থেকে দ্রুত বদলি ও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের দায়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
জানা গেছে, সচিবালয়ের কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা তথা নন-ক্যাডার পদ হতে উচ্চ পদে পূর্বের ধারাবাহিকতায় প্রাপ্য কোটা, যুগ্মসচিব, উপসচিব, সিনিয়র সহকারী সচিব এবং সহকারী সচিব অনুযায়ী পদ সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন সময়ে দাবি দাওয়া জানিয়ে আসছে।
দাবির প্রেক্ষিতে যৌক্তিকতা উপলব্ধি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে। কমিটির সর্বশেষ সভার কার্যবিবরণীতে অর্থ বিভাগের সদস্য ছাড়া বাকি ১০ জন সদস্য স্বাক্ষর করেন।
ইতোমধ্যে কমিটির অন্য সদস্যরা এই সমস্যা সমাধানে একমত পোষণ করে একটি প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করেন। কিন্তু নাদিরা সুলতানা প্রাথমিক অবস্থায় স্বাক্ষর দিতে অস্বীকৃতি জানান।
উল্লেখ্য, কর্মচারীদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এপিডি ওবায়দুর রহমান তাৎক্ষণিক উদ্যোগ নিয়ে ওই প্রতিবেদনে নাদিরা সুলতানাকে স্বাক্ষরের নির্দেশ দেন। এরপর সন্ধ্যায় নাদিরা স্বাক্ষর দেন।
বাংলাদেশ সময় : ১৫১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২৪
জিসিজি/এসএএইচ