ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

৫৫ পরিবারকে সহায়তা, পাশে থাকার অঙ্গীকার সারজিসের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২৪
৫৫ পরিবারকে সহায়তা, পাশে থাকার অঙ্গীকার সারজিসের

ময়মনসিংহ: জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ময়মনসিংহ বিভাগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ৫৫ পরিবারকে আর্থিক অনুদানের চেক দেওয়া হয়েছে। এ সময় আপ্লুত হয়ে পড়েন শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে নগরীর তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে অনুদানের চেক দেওয়া হয়।  

এ সময় সবসময় তাদের পাশে থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম।  

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট দেশত্যাগে বাধ্য হন স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার। এ আন্দোলনে জীবন দিতে হয় বহু ছাত্র জনতাকে। এখনো হাসপাতালে আহত অবস্থায় কাতরাচ্ছেন অনেকে। ময়মনসিংহ বিভাগে শহীদ হন ৯৩ জন। আহত হন আরও অনেকে তাদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন। প্রাথমিকভাবে শনিবার সকালে নগরীর তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে ৫৫ জন শহীদ পরিবারের হাতে অনুদানের চেক তুলে দেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলমসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।  

একমাত্র সন্তানের পড়াশোনার জন্য ঢাকায় পারি জমিয়েছিলেন নগরীর পুরোহিত পাড়ার সামিরা জাহান মনি। থাকতেন ঢাকার আজিমপুরে। ছেলে আব্দুল্লাহ আল মাহিনকে ভর্তি করিয়েছিলেন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে।  

অনুদানের চেক পেয়ে দুচোখের পানি ফেলে সামিরা জাহান মনি বলেন, একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে আজ আমি একাকীত্ম জীবনযাপন করছি। সন্তানের রক্তে যে দেশ পেয়েছি সেটা ভালো চলুক, এর বেশি আর চাওয়ার কিছু নেই। আজিমপুরে ৪ আগস্ট ছেলের মাথায় দুটি গুলি লাগে ওইদিন রাত ১২টায় সে হাসপাতালে মারা যায়। এরপর সবকিছু গুটিয়ে ময়মনসিংহ চলে আসছি।  

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে আহত এবং শহীদদের সঠিক তথ্য সংগ্রহে কাজ করার কথা জানিয়ে তাদের পাশে সবসময় থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন সারজিস আলম।  

তিনি বলেন, শহীদ এবং আহতদের পরিবারকে সহযোগিতা করার লক্ষ্যে আমাদের এ ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু হয়েছে। আপনারা সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবেন। কারণ হচ্ছে খুনি হাসিনা সরকার সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে মাত্র দুই কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে জেল খাটিয়েছেন। আমরা আমাদের ফাউন্ডেশনের হিসেব সঠিক না রাখলে ২০ বছর পরেও যদি খুনি শেখ হাসিনার দোসররা ক্ষমতায় আসে তাহলে এই কারণে আমাদের জেলে যেতে হবে। তাই এটিকে একটি শক্তিশালী স্বচ্ছ ফাউন্ডেশন করতে চাই।

খুনি হাসিনা এবং তার দোসররা সবসময় চেষ্টা করছে আমরা যেন ব্যর্থ হই। আর আমরা ব্যর্থ হলে আমাদের অস্তিত্ব থাকবে না। প্রশাসনের মধ্যে যারা জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। বর্তমান প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে। আজকে যারা পদ পেয়েছেন তা আমাদের আন্দোলনের জন্য। আর আপনারা যদি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেন তাহলে আপনাদের পদে থাকার প্রয়োজন নেই। আপনাদের মধ্যে যারা অন্যায় করেছে তাদের বিচার আপনাদেরই করতে হবে। শকুনদের খারাপ নজর চক্রান্ত শেষ হয়নি, আমরা যদি বেঁচে থাকি তাহলে আমাদের জীবনের বিনিময়ে হলেও শহীদ পরিবারের পাশে থাকব। তাদের শরীরে বিন্দু পরিমাণ আঁচ লাগতেও দিব না।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. ইউসুফ আলী, জেলা প্রশাসক মো. মুফিদুল আলম প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।