ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘নার্সরা বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৫
‘নার্সরা বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার’ ছবি: পিয়াস/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: নারী প্রধান পেশা হওয়ায় নার্সরা বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ বেসিক নার্সিং কলেজ টিচার্স এসোসিয়েশনের নেতারা। এজন্য তারা ‘নার্সবান্ধব’ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।



মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ বেসিক নার্সিং কলেজ টিচার্স এসোসিয়েশনের মহাসচিব গুলশান আরা বিশ্বাস।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সভাপতি কোহিনূর বেগম, সদস্য জাসিন্তা অলিম্পিয়া গোমেজ, কানিজ ফাতেমা, আঞ্জুমান আরা ইসলাম, রাবেয়া খাতুন প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে গুলশান আরা বিশ্বাস বলেন, ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিপ্লোমাপ্রাপ্ত নার্সদের দ্বিতীয় শ্রেণীর পদমর‌্যাদা প্রদানের ঘোষণা দেন। একইসঙ্গে তার পূর্বে যারা দ্বিতীয় শ্রেণীসহ ঊর্ধ্বতন পদমর‌্যাদায় কর্মরত ছিলেন, তাদের প্রথম শ্রেণীতে নিয়মিতকরণের নির্দেশ প্রদান করেন।

তার নির্দেশনা অনুযায়ী নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রধান- নার্সিং ইনস্ট্রাক্টর ইনচার্জ, ইনস্টিটিউটের শিক্ষক-নার্সিং ইনস্ট্রাক্টর, সিস্টার টিউটর ও সেবিকা শিক্ষয়ত্রী; নার্সিং কলেজের শিক্ষক- ইনস্ট্রাক্টর ও ডেমনস্ট্রেটর; জেলা পাবলিক হেলথ নার্স, হাসপাতালের ডেপুটি নার্সিং সুপারিনটেন্ডেন্ট, ওটি সুপারভাইজার ও নার্সিং সুপারভাইজার এই নয়টি পদই প্রথম শ্রেণীভুক্ত করার কথা।

কিন্তু দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর ৪ মে ২০১৫ সাতটি পদ বাদ দিয়ে শুধুমাত্র দুইটি পদের পদোন্নতি দেয়া হয়। এ বৈষম্যের ফলে নার্সিং শিক্ষা ও প্রশাসনের ক্ষেত্রে সংকট ও জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।

এটি কর্তৃপক্ষে দৃষ্টিতে আনার জন্য আমরা স্মারকলিপি, কালোব্যাজ ধারণ ও মানবন্ধন করেছি। তারা আমাদের মৌখিক আশ্বাস দিলেও কার‌্যত সংকট আরও জটিল এবং গভীরতর করেছে।

৮ ডিসেম্বর আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় দ্বিতীয় শ্রেণীর ৭টি পদকে প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত না করে সিনিয়র স্টাফ নার্সদের মধ্য থেকে জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে ‘পদায়ন করে কার‌্যক্রম চালু রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে নার্সিং শিক্ষা ও সার্ভিসে প্রচণ্ড সংকট, বিশৃঙ্খলা, প্রশাসনিক জটিলতা ও অসন্তোষ সৃষ্টি হবে।
তিনি বলেন, এ সিদ্ধান্তে নার্সদের মাঝে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে, যার  বিরূপ প্রভাব পড়বে রোগীর সেবায়।

এ সময় তিনি নার্সিং সেক্টরের বিভিন্ন বৈষম্যের কথা তুলে ধরে প্রশ্ন করেন, নারীপ্রধান পেশা হওয়ার কারণেই কি নার্সদের এ ধরণের বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে?

গুলশান আরা বলেন, ১৯৯২ সাল থেকে সেবা পরিদপ্তরের পরিচালক পদ খালি রাখা হয়েছে এবং দীর্ঘ সময় প্রশাসন, শিক্ষা ও সার্ভিসেস উচ্চতর খালি পদে পদোন্নতি না দিয়ে সেসব পদে কাজ চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সর্বোচ্চ পদ পরিচালকসহ সকল নার্সিং কর্মকর্তাদের ভারপ্রাপ্ত, চলতি দায়িত্ব, নিজ বেতনে, প্রেষনে অথবা অ্যাকটিং হিসেবে সকল ঊর্ধ্বতন পদসমূহে কাজ করানো হচ্ছে। নার্সিং পেশার এ সমস্যা দূর করে অতি দ্রুত পদায়ন সমস্যা সমাধান করতে হবে।
২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ১০ হাজার নার্স নিয়োগের প্রক্রিয়াও দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান গুলশান আরা।

একই সঙ্গে নার্স পরিচালকের পদ যথাযথ পূরণ, নারী প্রধান নার্সিং পেশাকে ক্ষমতায়ন করা, বিদ্যমান নিযোগবিধি সংশোধন, নার্সদের সিলেকশন গ্রেড প্রদান, সেবাপরিদপ্তরসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পদ সৃজন ও অবকাঠামো বিনির্মাণসহ সকল সমস্যা সমাধানে এবং নার্সিং পেশার মানোন্নয়নে একটি নার্সিং কমিশন গঠনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৫
এসইউজে/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।