ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ ব্যাহত করতে পারবে না’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০১৬
‘বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ ব্যাহত করতে পারবে না’ প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা

ঢাকা: জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিক্ষা, প্রযুক্তি ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় সাফল্যের দিকে ক্রমাগত এগিয়ে যাচ্ছে। এ যাত্রা কেউ পরাভূত করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা।



শুক্রবার (০১ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় জগন্নাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে এসকে সিনহা বক্তব্য রাখেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিক্ষা, প্রযুক্তি ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় সাফল্যের দিকে ক্রমাগত এগিয়ে যাচ্ছে। এ যাত্রা কেউ পরাভূত করতে পারবে না। আমরা যে যেখানে থাকি না কেন সম্মিলিতভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি তথা সার্বিক উন্নয়নে নিরন্তর কাজ করে যাব।

তিনি বলেন, “আমার দৃঢ় বিশ্বাস ভাষাগত ও সাংস্কৃতিগত একক স্বত্ত্বা বিশিষ্ট যে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম করে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, সে জাতির অগ্রযাত্রা কেউ ব্যাহত করতে পারবে না। ”
 
“১৯৭১ সালে একমাত্র হল, জগন্নাথ হলে যত রক্ত ঝরেছে, আর কোনো হলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর কোনো হলে এত রক্ত ঝরেনি এবং কিছু ঐতিহাসিক দলিল, মুক্তিযুদ্ধের কিছু কাগজপত্র যুদ্ধাপরাধের বিচারের সময় আমাদের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছিল। কী মর্মান্তিক, নৃশংসভাবে আমাদের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল। তাদের রক্ত যদি এ রকম না ঝরত, আমরা কিন্তু এত তাড়াতাড়ি স্বাধীনতা পেতাম না। তাদের প্রতি রইল আমার গভীর শ্রদ্ধা। আর তাদের আত্মা যেন স্বর্গীয় শান্তি পায় আমি সেটাই চাচ্ছি। ”
 
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, আমি এ ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে দু-একটি কথা বলতে চাই। সেটা হলো, আমাদের শিক্ষা-ব্যবস্থা, শিক্ষার মান। আমাদের এই যে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। সেখানে শিক্ষক-ছাত্র-কর্মচারী প্রত্যেকের সর্বত্র অবক্ষয় দেখা যাচ্ছে। আমরা এই রকম একটা প্রতিষ্ঠানকে কী রকমে রক্ষা করতে পারব?

তিনি বলেন, “শিক্ষার ব্যাপারে আমাদের কি মান ছিল কি চিন্তা-চেতনা ছিল। আজকে আমরা কোথায় চলে যাচ্ছি। এখনও সোভিয়েত ইউনিয়নে ইউনিভার্সিটি অধ্যাপকদের সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়া হয়। ”

আমরা শিক্ষাকে এখন ব্যবসায় পরিণত করেছি। এই প্রতিষ্ঠানটা একটা মহান বিদ্যাপীঠ। আমার মহান বিদ্যাপীঠের অনারেবল শিক্ষক যারা, এই শিক্ষকেরা এখন ক্লাস নেওয়ার চেয়ে আমরা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির দিকে বেশি ঝুঁকে যাই। আমার এই কথা বলাতে অনেকে অখুশি হবেন। বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে আমি একটুও কুণ্ঠাবোধ করবো না। কারণ আমি যখন দেখি এ বিদ্যাপীঠ থেকে একজন ছেলে সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে আইন পেশায় আসে, তখন তাকে একটার বেশি দুটি প্রশ্ন করলে তার মুখ থেকে কোনো উত্তর বাহির হয় না। খুবই কষ্ট লাগে, যোগ করেন প্রধান বিচারপতি।

অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কানুতোষ মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০১৬ আপডেট সময়: ২১৪৭ ঘণ্টা.
ইএস/এটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।