ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সবসময় যাত্রী ভিড়ে ঠাসা বিমানবন্দর রেলস্টেশন

সিনিয়র স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০১৬
সবসময় যাত্রী ভিড়ে ঠাসা বিমানবন্দর রেলস্টেশন ছবি: পিয়াস/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: শুক্রবার (০১ জানুয়ারি) ‍দিনগত রাত সাড়ে বারোটা। রাজধানীর বিমানবন্দর রেলস্টেশন।

সঙ্গে স্ত্রী ও বছর পাঁচ/ছয়েকের ছেলেকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি মোহনগঞ্জ যাচ্ছেন আরিফ হোসেন।

বাংলানিউজের পরিচয় দিয়ে আলাপচারিতায় এ কথা জানালেন ট্রেনের জন্য বিমানবন্দর রেলস্টেশনে অপেক্ষায় থাকা আরিফ হোসেন। গুলশানের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। থাকেন কুড়িলে। মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে হঠাৎ করেই বাড়ির পথে তিনি।

এর আগে তার সঙ্গে সাক্ষাত হয় বিমানবন্দর রেলস্টেশন মাস্টার মুহম্মদ ফজলুর রহমান ভুঁইয়ার কামরায়। এ সময় কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে এসে ‘হাওর এক্সপ্রেস’ বিমানবন্দর রেলস্টেশনে দাঁড়ানো মাত্রই অন্য যাত্রীদের মতো তিনিও ছুটে গেলেন। আলাপ আর এগোলো না।

জানা যায়- এখন বিমানবন্দর রেলস্টেশনে সবসময় যাত্রী ভিড়ে ঠাসা থাকে। সড়ক পথে যানজটের কারণে উত্তরার অনেকেই এখন ট্রেনে কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে নামেন। এরপর কর্মস্থলমুখী হন।

তেমনি যারা বিমানবন্দর, টঙ্গী বা উত্তরায় কাজ করেন তারা এখন বাসের পরিবর্তে কমলাপুর রেলস্টেশনে ট্রেন ধরে বিমানবন্দর ও টঙ্গী রেলস্টেশনে এসে নামেন।

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে এখন দিনে দেড় লাখ টাকার কাছাকাছি টিকিট বিক্রি হয়। আর টিকিট বিক্রির পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে বলে জানান স্টেশন মাস্টার মুহম্মদ ফজলুর রহমান ভুঁইয়া।

দেশের উত্তরাঞ্চল-দক্ষিণাঞ্চলসহ সিলেট, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রামের লোকাল বা আন্তঃনগর সব ট্রেনই বিমানবন্দর রেলস্টেশন বিরতি দিয়ে গন্তব্যের পথে রওনা হয়। যে কারণে এ স্টেশনটি দিন-রাত সব সময় যাত্রী ভিড়ে সরগরম থাকে।

বিমানবন্দরের পরের স্টেশন টঙ্গী। ওই স্টেশন থেকে বিভিন্ন গন্তব্যমুখী হয় ট্রেনগুলো। ভোর পাঁচটা থেকে রাত একটা পর্যন্ত বিমানবন্দর রেলস্টেশন হয়ে পঞ্চাশটির বেশি ট্রেন চলাচল করে। যাত্রী ছাড়াও আছে পণ্যবাহী কন্টেনার ট্রেন।

দূরপাল্লার আন্তঃনগর ছাড়াও বলাকা, তিতাস ও জামালপুর কমিউটার যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। কমলাপুরমুখী জয়দেবপুর থেকে সকাল সাতটা দশ মিনিটে ছেড়ে আসা ট্রেনটি সকাল আটটা দশ মিনিটে বিমানবন্দর রেলস্টেশনে এসে পৌঁছায়। সকালে চলাচল করছে টঙ্গী-কমলাপুর ডেমো সার্ভিস। এ দু’টি ট্রেনেই যাত্রীরা চড়েন ঠাসাঠাসি করে।

অফিসটাইম হওয়ায় এ ট্রেন দু’টিতে যাত্রী ভিড় বেশি হয়। বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছাতে সময় লাগে ৩৫/৪০ মিনিট। ট্রেনে চলাচল মানে সময় কম লাগা।

বিমানবন্দর রেলস্টেশন মাস্টার মুহম্মদ ফজলুর রহমান ভুঁইয়া গর্বের সঙ্গে আরও জানালেন, রেলের সুদিন দ্রুত এগিয়ে আসছে।

পদ্মাসেতু ও কক্সবাজার রেললাইন সম্প্রসারিত হলে রেলের যাত্রী বেড়ে যাবে বহুগুণ। মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুরের মানুষ বাড়ি থেকেই ঢাকায় এসে অফিস করবেন। স্বল্প সময়ে বাড়িও ফিরে যেতে পারবেন। মানুষের চাপ কমে যাবে রাজধানীর ওপর থেকে।

তবে আগের তুলনায় বিমানবন্দর রেলস্টেশন প্লাটফর্ম বেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। আগের মতো শত শত ভাসমান লোকের সংখ্যা প্লাটফর্মে এখন তেমন দেখা গেলো না। সব মিলিয়ে এক নং প্লাটফর্মে ১০/১২ জনকে শীতের রাতে কাপড় মুড়ে শুয়ে থাকতে দেখা গেলো।

বাংলাদেশ সময়: ০৪৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৫
এসএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।