শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ভালোবাসার স্মরণে পালিত হচ্ছে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। বাংলা বর্ষপঞ্জির হিসেব বদলে যাওয়ায় একই সঙ্গে পালিত হচ্ছে পহেলা ফাল্গুনও।
শুক্রবার ভোর থেকেই প্রিয়জনের হাত ধরে ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে পড়েছে রাজধানীবাসী। ফাগুনের বাসন্তী রঙ আর ভালোবাসার লাল-নীলে রঙিন হয়ে উঠেছে রাজধানী।
ভালোবাসায় ভরা এ বসন্ত বরণ করতে এদিন সকাল ৭টা থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় শুরু হয়েছে উৎসব। সকাল থেকেই এখানে মানুষের ভিড়। সময় যত গড়িয়েছে বাসন্তী আর লালে ভেসে গেছে আনন্দের এ উৎসব।
ভালোবাসা দিবস ঘিরে তরুণ-যুবাদের তীর্থস্থানে রূপ নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। মানুষের উপচে পড়া ভিড়ে এ অঞ্চল যেন রূপ নিয়েছে মধুর ‘বৃন্দাবনে’।
কেবল টিএসসি বা চারুকলা অনুষদই নয়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনার বটমূল, ধানমন্ডি লেকসহ রাজধানী জুড়েই যুগল তরুণ-তরুণীদের উপস্থিতি। লাল গোলাপ, রজনীগন্ধাসহ নানান রঙের ফুল দিয়ে সবাই শুভেচ্ছা জানাচ্ছে প্রিয়জনকে। বলছে হৃদয়ের কথা।
ভালোবাসা দিবসে কেবল ফুলই নয়, শুভেচ্ছা কার্ড, ক্যান্ডিসহ বিভিন্ন উপহার বিনিময়ের মাধ্যমে ভালোবাসা ভাগাভাগি করে নিচ্ছে প্রেমিক যুগলরা। ফেসবুক, টুইটারেও ভালোবাসার ছড়াছড়ি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজীব-অহনা। পরিবারকে লুকিয়ে প্রেম করছেন গেলো দুই বছর। আর সেজন্যই নিজেদের বা বিভাগের নাম বলতে অনীহা তাদের। বাংলানিউজকে ভালোবাসা দিবসের অনুভূতি জানান তারা।
রাজীব বললেন, এবারের ভালোবাসা দিবসটি সত্যিই অন্যরকম। কারণ বসন্তের প্রথম দিনের ছোঁয়া লেগে আছে এতে। সে জন্য আমরা ভোরেই বেরিয়েছি। দুপুরের দিকে ওকে (অহনা) বাসায় পৌঁছে দিয়ে বিকেলটা কাটাবো বন্ধুদের সঙ্গে। আর সন্ধ্যার পর আছে পরিবারের সঙ্গে আয়োজন। সব মিলিয়ে ভালোবাসার সব মানুষকে একই দিনে দেখতে পাওয়ার দিন আজ।
অহনার মতে, ভালোবাসার জন্য আলাদা দিনের দরকার নেই। তিনি বলেন, রাজীব আমাকে জুন মাসের তিন তারিখে প্রথমবার ‘ভালোবাসি’ বলেছিল। আমার কাছে সেটিই ভালোবাসা দিবস। আবার আমার জন্মদিনকে আব্বু-আম্মু ভালোবাসা দিবস হিসেবে পালন করে। তবে তারপরও ভালোবাসার জন্য নির্দিষ্ট একটি দিন মন্দ কী!
রাজধানীর নতুন বাজার এলাকা থেকে টিএসসিতে গিয়েছেন আদনার সরদার-সুমাইয়া জাহান জুটি। তারা বলেন, ভালোবাসা দিবস শুধু মনের মানুষের সঙ্গে নয়, বাবা-মা, বন্ধু-বান্ধব সবার সঙ্গেই ভাগ করে নিয়েছি।
পহেলা ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবসের ঢেউ লেগেছে বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলমান অমর একুশে গ্রন্থমেলার প্রাঙ্গণেও। এদিন সকাল ১১টায় খুলেছে মেলায় দরজা। প্রথম দুই ঘণ্টা শিশু প্রহর হলেও, বড়দের উপস্থিতিই ছিল বেশি।
এদিন সকাল থেকেই মেলা জমেছে জানিয়ে অবসর প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা বাংলানিউজকে বলেন, শুক্রবার প্রচুর মানুষ আসবেন মেলায়। এটা ইতিবাচক। বেচাবিক্রি যাই হোক না কেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২০
ডিএন/এইচজে