শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বাঙালির চিরায়ত বসন্ত বরণে এবার যুক্ত হয়েছে নতুন পালক। হলুদ বসন্তে গোলাপি আভা ছড়িয়েছে ভালোবাসা দিবস।
খুলনা মহানগরীর ফারাজীপাড়া ফুল মার্কেট এলাকার ১৮টি ফুলের দোকানেই বসন্ত আর ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ফুলের জমজমাট বিক্রি হয়েছে। প্রতিবছরের ন্যায় ধারাবাহিকতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) বাংলা বিভাগের উদ্যোগে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে বসন্তবরণ করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে সকাল ৯টায় কবি জীবনানন্দ দাশ একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে বসন্তকে স্বাগত জানিয়ে কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন ও বাংলা বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. শেখ মো. রজিকুল ইসলামের নেতৃত্বে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষক ও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে শোভাযাত্রাটি কাজী নজরুল ইসলাম কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও কটকা স্মৃতিস্তম্ভ হয়ে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসন ভবনের সামনে দিয়ে অদম্য বাংলায় গিয়ে শেষ হয়েছে।
সেখানে বসন্তবরণে প্রভাতী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পরে বাংলা ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক মৌমিতা রায়ের সঞ্চালনায় বাংলা কবিতা ও গান, নৃত্য পরিবেশিত হয়। বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং মুনীর চৌধুরীর নাটক কবর, নষ্ট ছেলে, মানুষ অবলম্বনে ‘এই দিন সেই সময়’ নাটক মঞ্চস্থ করা হয়।
এছাড়া, প্রতিটি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বসন্ত বরণ উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনেক স্থানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
বটিয়াঘাটার রানা রিসোর্ট অ্যান্ড অ্যামিউজমেন্ট পার্ক (ওয়ান্ডারফুল কিংডম), মহানগরীর জাতিসংঘ শিশু পার্ক, শহীদ হাদিস পার্ক, রূপসা সেতু, নগরীর খালিশপুর এলাকার ওয়ান্ডার ল্যান্ড শিশু পার্ক, গিলাতলা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার চিড়িয়াখানা, ফরেস্ট ঘাটে বসন্ত বরণ ও ভালোবাসা দিবসে জনস্রোত নামে। বটিয়াঘাটায় হয়েছে ঘোড়ার দৌড় প্রতিযোগিতা।
বিশেষ এ দিনে একান্তে যারা প্রিয়জনের সঙ্গে কিছুটা মুহূর্ত কাটিয়েছেন তাদের জন্য অভিজাত হোটেলগুলো বিশেষ অফারে বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজের আয়োজন করে।
রানা রিসোর্ট অ্যান্ড অ্যামিউজমেন্ট পার্কে ঘুরতে আসা তরুণ চিকিৎসক ডা. সানজিদা বলেন, একসঙ্গে বসন্ত বরণ আর ভালবাসা দিবসের উৎসব ঘিরে প্রাণের ছোঁয়া সর্বত্র। রঙিন প্রাণের উচ্ছ্বাসের ঢেউ লেগেছে খুলনায়ও। শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় সপরিবারে বেড়িয়েছেন বেশিরভাগ মানুষ।
তিনি বলেন, রানা রিসোর্টের রাইডগুলো ভীষণ ভালো লেগেছে। তবে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট সাগরের উত্তাল ঢেউ এবং ওয়াটার স্লাইড। এখানকার পরিবেশ অনেক সুন্দর।
পার্কের মার্কেটিং ম্যানেজার আলী পাকবাজ জুয়েল বলেন, ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত উৎসব এবার একসঙ্গে হওয়ায় পার্কে ভিড় বেশি ছিল। আর সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় পার্কে তরুণ-তরুণীর পাশাপাশি চিকিৎসক, ব্যাংকারসহ বিভিন্ন পেশার দর্শনার্থী এসেছেন। আমরা চেষ্টা করছি দর্শনার্থীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২০
এমআরএম/এফএম