ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

হোটেলে কোয়ারেন্টিন, দেশে ফিরতে অনাগ্রহী যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০২১
হোটেলে কোয়ারেন্টিন, দেশে ফিরতে অনাগ্রহী যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা

সিলেট: করোনা ভাইরাসের নতুন ধরনের (স্ট্রেইন) সংক্রমণের কারণে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত সিলেট প্রবাসীরা দেশে ফিরছিলেন। এতে সিলেটকেও ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এ অবস্থায় যুক্তরাজ্যের সঙ্গে প্লেন যোগাযোগ বন্ধেরও দাবি উঠে।  

তবে ঝুঁকির বিষয়টি সামনে এনে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে আসা যাত্রীদের নিজ খরচে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। গত ২৮ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে জোর দিচ্ছে মাঠ প্রশাসন।  

এ লক্ষ্যে সিলেটেও নিজ খরচে প্রশাসন নির্ধারিত হোটেলে বাধ্যতামূলক ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন থাকার নির্দেশনার পর যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনেকেই দেশে ফিরতে আগ্রহ হারাচ্ছেন বলে জানা গেছে।  

এ বিষয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসী দেওয়ান জাকির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে নিজ খরচে থাকার নির্দেশনার কারণে প্রবাসীদের অনেকে দেশে ফেরার জন্য টিকিট বুকিং দিয়ে রাখলেও এখন বাতিল করছেন।

তিনি বলেন, হোটেলে নিজ খরচে থাকার চেয়ে নিজ নিজ বাড়িতে কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করলে সুবিধা হত। এতে প্রবাসীরা উৎসাহিত হতেন। কিন্তু হোটেলে ১৪ দিন অতিবাহিত করাটা খুবই দুঃসহ হয়ে পড়বে। যে কারণে দেশে ফিরতে আগ্রহীদের অনেকে টিকিট বাতিল করতে দেখা গেছে।  

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সপ্তাহের প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্য থেকে সরাসরি সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের ফ্লাইট আসে। সর্বশেষ গত ৩১ ডিসেম্বর ২৩৭ যাত্রী নিয়ে সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে আসে বিমানের ফ্লাইট। এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর ২০২ জন ও গত ২৪ ডিসেম্বর ২০২ জন যাত্রী যুক্তরাজ্য থেকে সিলেটে ফেরেন। এ তিনদিনে যথাক্রমে ১৬৫, ১৪৪ ও ২০২ জন ছিলেন সিলেটের যাত্রী। সব মিলিয়ে গত ডিসেম্বরে লন্ডন থেকে আটটি ফ্লাইটে এক হাজার ২২৬ যাত্রী সিলেট এসেছেন।

এ অবস্থায় আগামী সোমবার (৪ জানুয়ারি) যুক্তরাজ্যের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে বিমানের আরেকটি ফ্লাইট সিলেটে আসবে। তবে এ ফ্লাইটে আগের তুলনায় যাত্রী সংখ্যা কম। সোমবারের ফ্লাইটে সিলেটের ৬৯ জন যাত্রী রয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

যাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য সিলেটে হোটেল স্টার স্পেসিফিক ও হোটেল হলি গেটকে চূড়ান্ত করেছে সিলেট জেলা প্রশাসন। যাত্রী সংখ্যা বাড়লে হোটেলের সংখ্যা ছয়টি করা হতে পারে। এছাড়া একসঙ্গে ৬০০ জনকে কোয়ারেন্টিনে রাখার মতো ব্যবস্থা করেছে বলেও জানা গেছে সিলেট প্রশাসন সূত্রে।  

সিলেটে আসা যাত্রীদের বিমানবন্দর থেকে বিটিআরসির বাসে করে সরাসরি হোটেল নিয়ে আসা হবে। যাতে যাত্রীরা হোটেলের বাইরে না যান। এমনকি তাদের স্বজনরাও প্রবেশ করেতে পারবেন না। আর কোয়ারেন্টিন শতভাগ নিশ্চিত করতে হোটেলগুলোর সামনে সার্বক্ষণিক পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

এদিকে করোনাকালেও রোববার (৩ জানুয়ারি) সিলেট থেকে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন ১২৬ জন যাত্রী। এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় বিজি-৬০৪ বিমানের ফ্লাইটে তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওয়ানা হন। সেখান থেকে বিজি-০০১ ফ্লাইট বাংলাদেশ ছেড়ে তাদের নিয়ে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে উড়াল দেবে।

সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সোমবার যুক্তরাজ্য থেকে বিমানের সরাসরি ফ্লাইটে যাত্রীরা সিলেটে এসে পৌঁছাবেন। তবে কত সংখ্যক যাত্রী আসছেন তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি তিনি।

এরআগে গত ২৯ ডিসেম্বর সিলেটের বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে একটি সভায় যুক্তরাজ্যফেরত যাত্রীদের কোয়ারেন্টিনে রাখার জন্য সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন বিআরডিটিআই ক্যাম্প এবং যাত্রীদের আর্থিক অবস্থা অনুযায়ী বিভিন্ন হোটেলে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখার সিদ্ধান্ত হয়। কোয়ারেন্টিন খরচ বহন করতে না পারাদের সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সিলেটের শাহপরাণ এলাকার বিআরডিটিআই ক্যাম্পে রাখার সিদ্ধান্ত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০২১
এনইউ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।