নরসিংদী: নরসিংদীর রায়পুরায় বৈদ্যুতিক মিটার নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বড় দুই ভাইয়ের হাতে ছোট ভাই খুন হয়েছে।
সোমবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে নিহত শফিকুল ইসলামের (২৫) মরদেহ উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, শফিকুল ইসলামকে বাড়ির কাঁঠাল গাছের সঙ্গে বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করেছেন তার বড় দুই ভাই। রোববার (১০ এপ্রিল) দিনগত রাত ২টার দিকে রায়পুরা উপজেলার হাইরমারা ইউনিয়নের দড়ি হাইরমারা গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত শফিকুল হাইরমারা ইউনিয়নের দড়ি হাইরমারা গ্রামের মৃত মোরশেদ মিয়ার ছেলে। তিনি মনিপুরা বাজারে কুলির কাজ করতেন। অন্যদিকে অভিযুক্ত দুই ভাই হলেন- মাসুম মিয়া ও মোতালেব মিয়া।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, জমিজমার নিয়ে ওই তিন ভাইয়ের মধ্যে সম্পর্ক আগে থেকেই খারাপ ছিল। এদের মধ্যে নিহতের বড় ভাই মোতালিব টাকার বিনিময়ে মানুষের জমিতে পানি দেওয়ার কাজ করতেন। পানির আর মটর চালানোর জন্য তিনি পল্লি বিদ্যুতের অবৈধ লাইন ব্যবহার করে আসছিল। এর ওই মিটার থেকে মাসুম মিয়া ও নিহত শফিফুল বিদ্যুৎ ব্যবহার করতেন। কিছুদিন আগে মোতালিব পল্লিবিদ্যুতের লোকজনের ভয়ে মিটারটি সরিয়ে অন্যত্র স্থাপন করেন। এর ফলে শফিকুল আর তার ঘরে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারছিলেন না। তাই নিহত শফিকুল ক্ষুব্ধ হয়ে বড় ভাই মোতালিবের নামে পল্লিবিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ দায়ের করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পল্লিবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ রোববার লাইনটি বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে শরিফুলের ওপর ক্ষুব্ধ হন বড় দুই ভাই। রোববার রাতে শফিকুল বাড়ি এলে তিন ভাইয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এই বাগ-বিতণ্ডা কিছুক্ষণের মধ্যেই হাতাহাতিতে রূপ নেয়। উত্তেজনার একপর্যায়ে মাসুম ও মোতালেব লাঠি নিয়ে শফিকুলের ওপর চড়াও হন। তাকে ধরে এনে বাড়ির উঠানের কাঁঠাল গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলেন। পরে তাকে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকেন। এক সময় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হলে ওই দুই ভাই পালিয়ে যান।
হত্যাকাণ্ডের সময় তাদের মা ওই বাড়িতে ছিলেন না, তিনি তার বাপের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। সোমবার সকালে এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় শতাধিক লোক ওই বাড়িটিতে জড়ো হয়ে যায়। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন ঘটনাস্থলে এসে রায়পুরা থানা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ নিহতের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
রায়পুরা থানার উপ-পরির্শক (এসআই) আতিকুর রহমান বলেন, মূলত অবৈধ বিদ্যুতের লাইন ব্যবহারের মিটার নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে। নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। আর অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২২
এএটি