ঢাকা: প্রথম রমজান থেকে শুরু হয়েছে রাজধানীতে তীব্র যানজট। প্রতিদিনই চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নগরীর পরিবহন চালক, যাত্রী ও পথচারীদের।
সড়ক, পরিবহন ও নগর উন্নয়ন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নানা কারণে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা কারো মধ্যে যথেষ্ট সচেতনতা এখনও জেগে ওঠেনি। এদিকে সড়ক নিরাপদ ও যানজট মুক্ত রাখতে কিছু বিধিনিষেধ আইন কানুন রয়েছে। কিন্তু সড়কে যারাই চলাচল করছে, তাদের বড় একটি অংশ ট্রাফিক আইন মেনে চলে না। এদিকে, পরিবহন চালকরা, বিশেষ করে প্রাইভেটকার চালকরা সড়কের পাশে বেশি পার্কিং করে, এটিও যানজটের একটি কারণ। তাছাড়া নগরীতে অসংখ্য বহুতল ভবন রয়েছে, কিন্তু কোনো ভবন মালিক গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা করেননি। এই কারণেও সড়কেই গাড়ি পার্কিং করে রাখতে দেখা যায় অধিকাংশদের।
এসব মিলিয়ে সড়কে যানজট এখন নগরবাসীর বিষকাঁটা হয়ে উঠেছে। ছোট-বড় সড়ক পাড়া-মহল্লার অলি-গলি সবখানেই যানজট দেখা দিচ্ছে।
সোমবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ঘুরে যানজটের ভয়াবহ চিত্র দেখা যায়।
রাজধানীর উত্তরা থেকে আজমপুর হয়ে জসিমউদদীন ও বিমানবন্দর পর্যন্ত দিনের বেশিরভাগ সময় যানজট থাকতে দেখা যায়। যানজটের সঙ্গে সড়কে ধুলাবালুও রয়েছে। এই সড়কটিতে পরিবহন চালকদের মধ্যে কোনো আইন মানার প্রবণতা দেখা যায়নি। বিশেষ করে ব্যক্তিগত গাড়িগুলো এই সড়কের যে কোনো স্থান দিয়েই ইউটার্ন নিয়ে লেন পরিবর্তন করছে। এই সড়কে যানজট নিরসনে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগও অনেকটা হাঁপিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, রাজধানীর বনানী-কাকলী, মহাখালী হয়ে সাতরাস্তা পর্যন্ত সড়কে সকালে ও বিকেল তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এই সড়কের সংযোগ ফ্লাইওভার দিয়ে বিজয় সরণী পর্যন্ত থাকে প্রচণ্ড যানজট। অপর দিকে, কুড়িল থেকে নতুনবাজার ও বাড্ডা হয়ে রামপুরা এবং মালিবাগ মৌচাক পর্যন্ত সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে প্রচণ্ড যানজট। কারণ এই সড়কটিতে সব ধরনের যানবাহনের চলাচল বেশি। এছাড়াও প্রগতি সরণীতে অনেকটা দাপটের সঙ্গে চলাচল করে তিন চাকার বাহন রিকশা।
এদিকে মিরপুর-২, ১০, ১১, ১৪ নস্বর সেকশনসহ শ্যামলী, আগারগাঁও ধানমন্ডি কলাবাগান ও পান্থপথে রয়েছে প্রচণ্ড যানজট।
সাতরাস্তায় যানজটে পড়া একটি পাঠাও মোটরসাইকেলের পেছনে থাকা যাত্রী নাজমুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, যানজট এখন আমাদের বিষকাঁটা। মোটরসাইকেলও এখন যানজটে আটকে থাকে।
এদিকে, যানজট নিরসনে দায়িত্ব কেউ নিচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেছেন, সরকারি বিভিন্ন সংস্থার লোকজনই রাস্তায় পার্কিং করছে। কাকে কী বলবেন, আর আমরা আমাদের গাড়িটা রাখবো কোথায়? নগরীতে গাড়ি পার্কিংয়ের স্থানের স্বল্পতা রয়েছে।
তিনি বলেন, আসলে আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করছি না। আমরা শুধু বলে যাচ্ছি, করতে হবে। কিন্তু আমরা কেউ দায়িত্ব নিচ্ছি না।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২২
এসজেএ/এসআইএস