ঢাকা: বৈশ্বিক খাদ্য সংকটের কথা তুলে ধরে তার প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে প্রতি ইঞ্চি জমিতে ফসল আবাদ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (১১ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি দেশবাসীকে এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সারা বিশ্বব্যাপী জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। এর ধাক্কাটা তো আমাদের লাগবে। এজন্য আমাদের এখানে কি করা উচিত। আমি বলবো, আমার অফিসে এবং যারা বেসরকারি খাত রয়েছেন আমাদের কিন্তু মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে যে এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে। ’
তিনি বলেন, ‘এই উৎপাদন এজন্য করতে হবে যে করোনা ভাইরাস যখনই দেশে এসেছে তখন থেকে আমার এই ধারণা ছিল যে সামনে আমাদের খুব খারাপ দিন, পৃথিবীতে খারাপ দিন আসবে। খাবারের অভাবটা ব্যাপক দেখা দেবে, খাদ্য ঘাটতিটা হবে। ’
‘সেজন্য আমি সব সময় বলছি যে যার যতটুকু জমি, দরকার হলে ছাদ বাগান থেকে শুরু করে, নিজের খাদ্যটা নিজে উৎপাদন করা, অর্থাৎ খাদ্যে যেন আমরা সব সময় স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকতে পারি। ওই ধাক্কাটা যেন আমাদের দেশে না এসে পড়ে। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যা আছে আমাদের আরও কিছু উৎপাদন করতে হবে। যার পুকুর আছে মাছ করুক। ধান, তরিতরকারি, নিদেনপক্ষে একটা কাঁচামরিচ গাছ হলেও লাগান। ’
বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনা, তারপর হচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ এ দুটো মিলে তৃতীয় হয়তো আরেকটা ধাক্কা আসবে। যে কারণে আমাদের নিজেদের ব্যবস্থাটা নিজেদের নিতে হবে। ’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সমস্যা হয়ে যাচ্ছে আমরা বাইরের যে জিনিসের ওপর নির্ভরশীল। যেমন এখন আমরা এলএনজি আমদানি করছি, তার দাম বেড়ে গেছে। আমাদের তেল আমদানি করতে হচ্ছে, তেলের দাম ব্যাপক ভাবে বেড়ে গেছে। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সারা বাংলাদেশে বিদ্যুৎ দিয়েছি ঠিকই আবার এই যে তেলের দাম বাড়ানো, এলএনজির দাম বাড়ানো এ সমস্যাগুলো আমাদের সামনে দেখা দেবে। আমাদের সামনে কি করণীয় সে বিষয়ে এখন থেকে আমাদের আরও চিন্তা করতে হবে। তার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। তার বিকল্প আমাদের খুঁজতে হবে। ’
তিনি বলেন, ‘এখানে যদি আরও সমস্যা হয় তাহলে তার বিকল্প আমরা কি কাজ করতে পারি। অর্থাৎ আমাদের মানুষের জীবন-জীবিকার পথটা কীভাবে সুগম রাখতে পারি। সেটা আমাদের দেখতে হবে। সেভাবে আমাদের কাজ করতে হবে। সেই চিন্তাটা আমাদের এখন থেকে করা দরকার। ’
প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলে এ মতবিনিময় সভা।
এতে অন্যান্যের বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, রাষ্ট্রদূত-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমম্বয়ক জুয়েনা আজিজ এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম প্রমুখ।
সভা সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিগত তিন বছরের কাজের ওপর একটি উপস্থাপনা উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২২
এমইউএম/আরআইএস