বরিশাল: একটি বেসরকারি টেলিভিশনের বরিশাল ব্যুরো প্রধান অপূর্ব অপুকে অপহরণচেষ্টায় জড়িত তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এই ঘটনার মূল হোতা জিহাদুল ইসলাম জেহাদ, নূরে আলম ও হাবিবসহ বাকিরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।
শুক্রবার (৩ মে) দুপুর ১টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অপারেশন অ্যান্ড প্রসিকিউশন) এনামুল হক।
গ্রেফতার হওয়ারা হলেন- বরিশাল নগরীর কাউনিয়া এলাকার মৃত আব্দুল বারেক সিকদারের ছেলে মামুন সিকদার ওরফে চিডা মামুন, আব্দুল বারেক হাওলাদারের ছেলে নুরুন মোমেন ওরফে কোটন, নগরীর নথুল্লাবাদ এলাকার মৃত আজিজ খানের ছেলে মাহমুদ ওরফে রিয়াজ।
এনামুল হক বলেন, সাংবাদিক অপূর্বকে অপহরণচেষ্টার পরপরই কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়৷ এরপর আমরা ভিডিও ফুটেজ ও বিভিন্ন সূত্র ধরে অভিযানে নামি। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পটুয়াখালী জেলার মহিপুরে অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা গ্রেফতার হওয়াদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি। ঘটনার কারণ এখনও সুনিশ্চিত হওয়া যায়নি। মূল হোতাদের ধরতে পারলে পুরো রহস্যের জট খুলবে বলে জানান বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার।
এদিকে গ্রেফতার হওয়াদের ছবি তুলতে গেলে তারা পুলিশের সামনেই চিত্র সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্য মূলক আচরণ করেন। পরে ডিবি পুলিশের হস্তক্ষেপে তারা শান্ত হয়।
এর আগে গত ২৯ মে বিকেল সাড়ে ৩টায় একটি বেসরকারি টেলিভিশনের বরিশাল অফিসে যাওয়ার পথে ব্যুরো প্রধান অপূর্ব অপুকে অপহরণচেষ্টা চালায় একদল সন্ত্রাসী। এ ঘটনার পরপরই বরিশালসহ সারাদেশ সাংবাদিক সমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ প্রতিবাদ শুরু করে। ঘটনার ছয় দিন পর তিন জনকে গ্রেফতারে সক্ষম হয়েছে ডিবি পুলিশ।
বরিশাল মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার মনজুর রহমান জানান, প্রাথমিকভাবে আসামিরা জানিয়েছেন যে মুমীতু কমিউনিটি সেন্টারের মালিক মামুন মল্লিক দৈনিক সময় সংবাদ নামে একটি পত্রিকার সাইনবোর্ড লাগিয়েছিলো তার ভবনে। সেটি নিয়ে সাংবাদিক অপূর্বর সাথে কথার কাটাকাটি হয় মামুনের সঙ্গে। সেজন্য অপুকে হেনস্তা করতে মামুন নির্দেশ দেয় জেহাদ ও ট্যারা হবিবকে। তবে বিষয়টি পুরো তদন্ত না করে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
মুমীতু কমিউনিটি সেন্টারের মালিক মামুনের স্ত্রী মিতু আক্তার বলেন, সাংবাদিক অপুর সঙ্গে আমার স্বামীর কোনো বিষয় নিয়েই ঝামেলা নেই। অপু আমাদের ভবনের গ্যারেজে দুই মাসের জন্য গাড়ি রাখে। সে ভাড়াও দিতে চেয়েছিলো, আমার স্বামী ভাড়া নেয়নি। জেহাদ আমার স্বামীকে ফাঁসাতে আমাদের ভবনের সামনে অপুর ওপর হামলা ও অপহরণের চেষ্টা করেছে। আমার স্বামী নির্দোষ।
তবে এই বিষয়ে সাংবাদিক অপূর্ব অপু বলেন, মুমীতুর মালিক মামুনের সঙ্গে আমার কোনোদিনই কোনো ঝামেলা হয়নি, ঝগড়া হয়নি। তার ভবনের গ্যারেজেই আমি গাড়ি রাখতাম। আমার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিলো। কি কারণে আমার ওপর জেহাদসহ অন্যান্যরা হামলা চালিয়ে অপহরণ চেষ্টা করেছেন তা বলতে পারছি না। মূল অভিযুক্তদের গ্রেফতার করলে সব বেরিয়ে আসবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০২২
এমএস/ইআর