ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বেড়াতে এসে বন্ধুর ঘের দখলের চেষ্টা!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২
বেড়াতে এসে বন্ধুর ঘের দখলের চেষ্টা! সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন ঘেরমালিক এনামুল কবির

বাগেরহাট: বাগেরহাটে বেড়াতে এসে বন্ধুর ঘের দখল করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ইমাম সোহাগ নামে এক ব্যক্তির নামে। ঘের দখলে নিতে ভাড়াটে লোক দিয়ে মালিককে মারধরসহ নানাভাবে হয়রানি করছেন তিনি।

বুধবার (২৮ সেপ্টম্বর) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ঘের মালিক মো. এনামুল কবির এমন অভিযোগ করেছেন।

এসময় ইমাম সোহাগের মাধ্যমে প্রতারিত আজমিরা বেগম নামে এক ব্যবসায়ী এবং এনামুল কবিরের ভাই মো. নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

অভিযুক্ত ইমাম সোহাগ বাগেরহাট শহরের দেওয়াল বাটি এলাকার বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ঢাকায় বসবাস করেন।

ক্ষতিগ্রস্ত মো. এনামুল কবির অভিযোগ করেন, ২০০৯ সাল থেকে তিনি বাগেরহাট সদর উপজেলার রাধাবল্লভ এলাকায় ২৫ বিঘা জমিতে ঘের করছেন। ২০২০ সালের প্রথম দিকে পূর্ব পরিচিত দেয়ালবাড়ি এলাকার ইমাম সোহাগ একদিন তার ঘেরে আসেন। নিজেকে সুপ্রিম কোর্টের অতিরিক্ত অ্যাটার্নি জেনারেলের পিএ পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সময় নানা কথা বলতেন। ঢাকায় থাকলেও তিনি মাঝে মাঝে বাগেরহাটে এসে তার ঘেরে যেতেন। ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় সোহাগ ঘেরের পার্টনার হওয়ার জন্য প্রস্তাব দেন। রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন ধরনের চাপ দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে সোহাগ ঘেরের ২৫ বিঘা জমির মধ্য থেকে মাত্র ২ বিঘার মালিকদের ভুল বুঝিয়ে হারির টাকা দেন এবং তাদের কাছ থেকে একটি লিখিত নেন।

সংবাদ সম্মেলনে এনামুল কবির আরও উল্লেখ করেন, চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে সোহাগ তার পুরো ঘের দখলের চেষ্টা করেন। এ জন্য জোরপূর্বক ঘেরের মাছ ধরে নেওয়াসহ লোক দিয়ে তার ওপর হামলাও চালান। ভাড়াটিয়া মাস্তান কাড়াপাড়া ইউনিয়নের মেজবাহ ও পঞ্চমালা এলাকার জসিমকে দিয়ে তাকে মারধর করান সোহাগ। এ ঘটনায় বাগেরহাট মডেল থানায় এবং বাগেরহাট আদালতে একাধিক মামলা করা হয়েছে সোহাগের নামে। এসবের পরও সোহাগের হাত থেকে তিনি রক্ষা পাননি। গত ২০ সেপ্টেম্বর ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে ঘেরের গই ঘর ভেঙে ফেলেন এবং মাছ ও গই ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করান। বর্তমানে তার ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের ভয়ে তিনি ঘেরে যেতে পারছেন না। এই ঘের ছাড়া তার আয়ের কোনো পথ নেই, এই ঘের করতে না পারলে বউ-বাচ্চা নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন এই ঘেরমালিক।

সংবাদ সম্মেলনে সোহাগের প্রতারণার শিকার ব্যবসায়ী আজমিরা বেগম বলেন, মায়ের অসুস্থতা, একটি মামলার জামিন ও ভাইয়ের বিয়ের কথা বলে সোহাগ আমার কাছ থেকে অন্তত ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়েছে। জনি নামের এক গাড়ি চালককে দিয়ে সোহাগ আমার প্রাইভেট কারও চুরি করিয়েছিল। পরে থানা পুলিশ আমার গাড়ি উদ্ধার করে দেয়।

তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টে চাকরির সুবাদে সোহাগ অনেকের সঙ্গেই প্রতারণা করেছে। বাগেরহাটের অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যুবলীগ নেতা আবু তাহেরের কাছ থেকে মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে ৮০ হাজার টাকা নিয়েছে। যে কোনো মূল্যে আমি সোহাগের কাছ থেকে টাকা ফেরত চাই।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইমাম সোহাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন।   সাংবাদিকদের বলেন, এনামুল কবির যেসব অভিযোগ করেছে সব মিথ্যা ও বানোয়াট। কবিরকে অনেক টাকা দিয়েছি, সে আমার পাওনা টাকা দেয়নি। আমি লোকজনের কাছ থেকে জমি ইজারা নিয়ে ঘের করছি। আমার ঘের দখলের চেষ্টা করছে কবির। ঘেরের জমির  বিষয়ে আদালত নিষেধাজ্ঞা  দিয়েছে।

বাংলাদেশ  সময়: ২০৫৯ ঘণ্টা, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।