শরীয়তপুর: সরকারি খাস জমি উদ্ধার করতে গিয়ে মীর গোলাম মোস্তফা নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার হামলার শিকার হয়েছেন শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল মামুন ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইমামুল হাফিজ নাদিমসহ চার জন।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) রাতে রামভদ্রপুর ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা রেজা শাহ আলম বাদী হয়ে ভেদরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ ও মামলার বিবরণে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে ভেদরগঞ্জ উপজেলার রামভদ্রপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সরকারি খাস জমিতে স্থাপিত প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বরাদ্দকৃত আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য নির্মিত ঘর পরির্দশনে যান রামভদ্রপুর ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা রেজা শাহ আলম। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দা ভেদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও রামভদ্রপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর গোলাম মোস্তফা ও জিন্না মীর মালতসহ ৪/৫ জন এসে ওই জমি দখলের উদ্দেশ্যে বাঁশের বেড়া দেওয়ার চেষ্টা করে। রেজা শাহ আলম এতে বাধা দিলে তাকে গালিগালাজ ও মারধর করা হয়। এ সময় স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই হামলাকারীদের নিষেধ করলে তাকে ‘‘রাজাকার” বলে কটাক্ষ করে এবং মারধর করা হয়। এ সময় হামলাকারীরা ওই প্রকল্পে থাকা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত সাইনর্বোড ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইমামুল হাফিজ নাদিম ঘটনাস্থলে গেলে তাদের ওপরও হামলা করে মীর গোলাম মোস্তফা বাহিনী। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেয়। রাতে রামভদ্রপুর ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা রেজা শাহ আলম বাদী হয়ে ভেদরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মীর গোলাম মোস্তফা ও জিন্না মীর মালতের বক্তব্যের জন্য বারবার চেষ্টা করেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, রামভদ্রপুরে সরকারি খাস জমিতে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বরাদ্দের আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য নির্মিত ঘর পরিদর্শন ও সরকারি উদ্ধার করতে গিয়ে ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা রেজা শাহ আলম স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মীর গোলাম মোস্তাফার হামলা শিকার হয়েছেন। এ সময় তারা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ‘রাজাকার’ বলে গালিগালাজ ও মারধর করা হয়। খবর পেয়ে আমি ও এসিল্যান্ড সেখানে গেলে আমাদের ওপর হামলা করা হয়।
এ ব্যাপারে ভেদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহালুল খান বাহার বলেন, ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ চারজনের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা রুজু হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০০৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০২২
আরআইএস