ঢাকা: ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা না দেওয়ার সংস্কৃতি চালু করেছিলেন জিয়াউর রহমানই বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার (২ মে) দুপুরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে ‘মহান মে দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ সংবাদপত্র শ্রমিক ফেডারেশন ও প্রেস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন নেতা ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় বাংলাদেশ সংবাদপত্র শ্রমিক ফেডারেশন ও প্রেস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি মতিউর রহমান তালুকদারের নেতৃত্বে অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মে দিবসের এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, সরকার শ্রমিকদের রুজি-রুটি অধিকার লুণ্ঠন করেছে। একইসঙ্গে একদলীয় শাসন কায়েম করার জন্য এগিয়ে যাচ্ছে, এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ২০০৬ সালে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ছিল এক হাজার ছয়শ ৬২ টাকা। এখন সেটি আট হাজার টাকায় উন্নীত হয়েছে। বিএনপির আমলে শ্রমিক-কর্মচারী, কৃষকদের ওপর গুলি করে তাদের হত্যা করা হয়েছে। এদেশে শ্রমিক-কর্মচারীদের অধিকার যদি লুণ্ঠন কেউ করে থাকে বা তাদের অধিকার খর্ব কেউ করে থাকে সেটা হচ্ছে বিএনপি।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি ধনী এবং বণিক শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ব করতো। তারা লুটেরাদের প্রতিনিধিত্ব করতো। এদেশের মেহনতি মানুষের প্রতিনিধিত্ব বিএনপি করে না। জিয়াউর রহমানের বক্তব্য ছিল, ‘মানি ইজ নো প্রবলেম’। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা না দেওয়ার সংস্কৃতি জিয়াউর রহমানই চালু করেছিলেন।
বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। সেই বিশ্বব্যাংক সোমবার (১ মে) আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পাঁচটি ঋণ সহায়তা চুক্তি সই করেছে, এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথমমত বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে তারা যে ভুল করেছিল, সেটি তারা অনুধাবন করতে পেরেছে। সে কারণে প্রধানমন্ত্রীকে বিশেষ আমন্ত্রণ জানিয়ে তারা ওয়াশিংটনে নিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক এখন বাংলাদেশকে সব ধরনের সহায়তা করতে চায়। আমরা যেসব সময় সব ধরনের সহায়তা নেবো সবার কাছ থেকে তা কিন্তু নয়। বিশ্বব্যাংক পরবর্তীতেও পদ্মা সেতুতে সহায়তা করতে চেয়েছিল। আমরা সেটি নেইনি এবং ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাংক বেশ কয়েকটি প্রকল্পে সহায়তা করতে চেয়েছে। কিন্তু আমরা যে সহায়তা নিতে পারবো সেকুটুই নেবো এবং সবক্ষেত্রে সহায়তা আমরা নিই না। কোনোটা নেবো কোনোটা নেবো না, সেটা ঠিক করার সমর্থ্য আমরা অর্জন করেছি। কেউ সাহায্য করতে চাইলে নিতে হবে বা কোনোটা নেবো, কোনোটা নেবো না সেই সামর্থ্য এবং সাহস জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্জন করেছে।
ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, বিশ্বব্যাংকের সহায়তার প্রস্তাব কিংবা চুক্তি সেটিকে অবশ্যই আমরা অভিনন্দন জানাই। এদিকে আইএমএফের প্রধান আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলেছেন, বাংলাদেশ পৃথিবীতে রোল মডেল এবং অর্থনীতির সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন অগ্রগতির জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রয়োজন। সুতরাং বিশ্বব্যাংক তাদের ভুল বুঝতে পেরে তারা সর্বোতভাবে আমাদের সহায়তা করতে চাচ্ছে সেটিকে আমরা অভিনন্দন জানাই।
মির্জা ফখরুল সাহেব ও আইএমএফের প্রধান কী বলেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, এটা একটু চিন্তা করলেই বুঝা যায় আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনার ইমেজ ও তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ইমেজ কোনো জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে।
অক্টোবর মাসের শেষে নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা হতে পারে বলে আপনি বললেন, তাহলে নির্বাচন কবে হবে জানতে চাইলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে অক্টোবরের শেষে শিডিউল ঘোষণা করতে হবে। এটা আমার অনুমানভিত্তিক কথা।
তাহলে নির্বাচন কী ডিসেম্বরেই হবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন কবে হবে সেটা নির্বাচন কমিশন ঠিক করবে।
২০১৮ সালে তিন মাসের জন্য ছোট আকারে কেবিনেট হয়েছিল এবারও কী সে ধরনের কিছু হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্য0মন্ত্রী বলেন, সেটা বলার সময় এখনও আসেনি আর এটার বলার একমাত্র এখতিয়ার প্রধানমন্ত্রী রাখেন, আমি রাখি না।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫১ ঘণ্টা, মে ০২, ২০২৩
জিসিজি/এএটি