ঢাকা: সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যায় জিয়াউর রহমান সরাসরি জড়িত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
সোমবার (১৪ অগাস্ট) দুপুরে নগরীর মেরাজনগর সুপার মার্কেট এলাকায় ৫৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকাশ কুমার ভৌতিকের উদ্যোগ ও সভাপতিত্বে আয়োজিত ‘১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে’ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে (ডিএসসিসি) তিনি এ মন্তব্য করেন।
তাপস বলেন, ৭৫ সালের মার্চ মাসে খুনি রশিদ ও ফারুক জিয়াউর রহমানের সাথে দেখা করে। খুনিরা সেদিন সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব আর্মি স্টাফ জিয়াউর রহমানকে বলেছিল, আমরা রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চাই। খুনি রশিদ, ফারুক সেদিন রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও জিয়া তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। মার্শাল ল-এ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। তাদেরকে আটক করা বা গ্রেপ্তার করার কোনো চেষ্টা করেননি। মার্চ হতে আগস্ট, এই দীর্ঘ সময়ে জিয়া তাদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অথবা রাষ্ট্রপতি অথবা সরকারের কাছে তথ্য দেননি। বরং তিনি সেই সকল খুনিদেরকে বলেছেন - ‘ইউ গো এহেড’- তোমরা এগিয়ে যাও। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যখন অধস্তন কর্মকর্তাকে বলে তোমরা এগিয়ে যাও, তার মানে রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করতে তিনি তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন এতগুলো জীবন্ত প্রাণকে হত্যা করার।
জিয়াউর রহমান ঘৃণ্য রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ডেও জড়িত ছিল জানিয়ে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, সে আরও ঘৃণ্য রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল। তখন জাসদ গঠন করা হয়েছিল সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ড করার জন্য। সেই জাসদের সাথে নেপথ্যে জিয়াউর রহমানের সম্পর্ক ছিল এবং তাদের সাথে সে জড়িত ছিল। সেটা প্রমাণ পায়, ৭ নভেম্বরে যে ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনায় সিরাজুল আলম খান বলেছিলেন, জিয়াউর রহমানের তাদের সাথে একজনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে। তাদের গণবাহিনীকে ব্যবহার করে ৭ নভেম্বরের সেই ঘটনা ঘটায়। সিরাজুল আলম খান তার জীবদ্দশায় লেখনীতেও এই ঘটনাপ্রবাহ লিখে গেছেন। তাহলে একজন সেনা কর্মকর্তা কেন একটি বিরোধী রাজনৈতিক গোষ্ঠী, যারা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল, আজকে যেমনি জঙ্গিবাদীরা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত, সেরকম একটি গোষ্ঠীর সাথে কি কারণে আদান-প্রদান, কি কারণে জড়িত, কি কারণে সম্পৃক্ত- এ ঘটনাপ্রবাহ থেকে পরিষ্কার হয়, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর হত্যার ষড়যন্ত্র এবং হত্যাকাণ্ডের সাথে গভীরভাবে জড়িত ছিল।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম প্রমুখ বক্তব্য দেন। জিয়াউর রহমান এ হত্যাকাণ্ড ও ষড়যন্ত্রের সাথে সর্বাত্মকভাবে জড়িত ছিল এবং এই হত্যাকাণ্ডে ষড়যন্ত্রের মূল কুশীলব ছিলেন বলে অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২৩
এইচএমএস/এমজে