ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

সালতামামি

নির্বাচন-অভ্যুত্থানে টালমাটাল বরিশাল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪
নির্বাচন-অভ্যুত্থানে টালমাটাল বরিশাল

বরিশাল: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন, ভারসাম্যহীন বাজারদর, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, নৌ ও সড়ক পথের দুর্ঘটনা নিয়ে বরিশালে আলোচনার বছর ছিল ২০২৪।

সরকার পতনের আগে জুলাই মাসে শুরু হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দক্ষিণাঞ্চল তথা বরিশাল সব থেকে সরব ছিল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যৌক্তিক এ আন্দোলনে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও বরিশালের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাজপথে নামে, যাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা।

যদিও প্রকাশ্যে অস্ত্রধারীদের মহড়া ও একাধিক হামলার ঘটনা রাজপথে আন্দোলনকারীদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। তবে তাদের কার্যক্রম কোনোভাবেই দমাতে পারেনি। কৌশলী আন্দোলনে পুলিশের বুলেট, টিয়ারসেল, সাউন্ড গ্রেনেডের বিস্ফোরণ, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলার মধ্যে বরিশালে কোনো নিহত হওয়ার ঘটনা না ঘটলেও আহত হয়েছেন অনেকেই। তবে সবকিছু মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধ থেকে আন্দোলন চালিয়ে গিয়ে ৫ আগস্ট বরিশালের রাজপথসহ সর্বত্র বিজয় উল্লাসে মেতে ওঠে ছাত্র-জনতা।

এদিকে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে বরিশাল মহানগর ও জেলা বিএনপির নেতারা প্রশাসনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের রোষানলে পড়েন।  ভাঙচুরের পাশাপাশি বিএনপি কার্যালয়ে দেওয়া হয় আগুন। আবার মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুকসহ অনেকেই হামলার শিকার হওয়ার পাশাপাশি মিথ্যে মামলারও শিকার হয়েছেন। শুধু যে বিএনপি এমনটা নয়, আন্দোলনের সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে সিনিয়র সাংবাদিক আক্তার ফারুক শাহিন, শামীম আহমেদসহ একাধিক সাংবাদিকও হামলার শিকার হয়েছেন। এদিকে ৫ আগস্ট সরকার পতন ও আওয়ামী লীগ সভাপতি দেশ ত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ার আগে থেকেই আত্মগোপনে চলে যান বরিশালের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।  

বিজয় উল্লাসের মধ্যেই বিক্ষুব্ধ জনতা নগরের বটতলা রোডের সদর আসনের সংসদ সদস্যের বাড়ি, কালিবাড়ী রোডের সেরনিয়াবাত ভবন, অ্যানেক্স ভবনসহ একাধিক আওয়ামী লীগ ও কাউন্সিলর কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটনায়। এর মধ্যে সেরনিায়বাত ভবনে আটকা পড়ে সিটির সাবেক কাউন্সিলর গাজী নঈমুল হোসেন লিটুসহ তিনজনের মৃত্যু হয়।

বিজয়ের পর পুলিশের কর্মবিরতির কারণে বরিশাল শহরসহ দক্ষিণাঞ্চলের ট্রাফিক ব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি জেলাভিত্তিক মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি কার্যক্রম হাতে নেয়। তল্লাশি কার্যক্রমের মধ্যেই ৮ আগস্ট বিকেলে নগরের চৌমাথা এলাকায় বিপুল পরিমাণ টাকা, ডলার ও স্বর্ণালংকারসহ বরিশাল নগর থেকে শিক্ষার্থীদের হাতে আটক হয়েছেন পটুয়াখালী গণপূর্ত দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হারুন অর রসিদ, যা মিডিয়ার মাধ্যমে দেশজুড়ে আলোচনার সৃষ্টি করে। এছাড়া পাড়া, মহল্লাতেও রাতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতের উদ্যোগ নেয় শিক্ষার্থীরা। ধীরে ধীর সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ার পাশাপাশি সপ্তাহ খানেক পরে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে থানাগুলোতে পুলিশ তাদের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু করে। তবে পুলিশের অনুপস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তুলনামূলক ভালো ছিল বলে দাবি নগরবাসীর। যদিও ৩ সেপ্টেম্বর রাতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) ও সরকারি ব্রজমোহন কলেজের (বিএম) শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে নগরবাসীকে কিছুটা আতঙ্কিত করেছে।  

অপরদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বরিশালে পুলিশের দায়ের করা ১১টি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। সাক্ষী ও প্রমাণ না পাওয়ায় নগর পুলিশের সাতটি ও জেলা পুলিশের চারটি মামলা প্রত্যাহার করা হয়।  

রাজনৈতিক মামলা
বছরের শুরুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট বর্জন নিয়ে বিএনপির বরিশালের নেতাকর্মীরা যেমন মামলার শিকার হন, তেমনি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পাশে থাকায় হামলার শিকার হওয়ার পাশাপাশি জুলাইয়ে মামলার শিকারও হন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তবে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নগরের সিএন্ডবি রোডে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনায় ২২ আগস্ট প্রথম মামলা দায়ের করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক। যে মামলায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম, সাবেক মেয়র আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাদ, সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন, এফবিসিআই’র পরিচালক মঈনুদ্দিন আবদুল্লাহসহ ১ হাজার ৮১ জনকে আসামি করা হয়। এরপর বিস্ফোরক আইনসহ পৃথক বিভিন্ন ধারায় মহানগর বিএনপির সদস্য রফিকুল ইসলাম রিপন ও বিএনপি নেত্রী রুমা আক্তার দুটি মামলা দায়ের করেন। যে মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪৬৬ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।  এছাড়া বিএনপি নেতাদের ওপর হামলার ঘটনায় মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার জিয়া, মহানগর বিএনপির ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।  

এদিকে বানারীপাড়া, গৌরনদী, বাবুগঞ্জ, মুলাদী, মেহেন্দিগঞ্জ ও বাকেরগঞ্জেও একাধিক হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে।  

সেই সঙ্গে দীর্ঘ ১৭ বছর আতঙ্কে থাকা পরিবার ও ব্যক্তিও ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেন। যেমন ১১ সেপ্টেম্বর চাঁদার দাবিতে হামলা-মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে বরিশাল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি মো. শাহে আলম তালুকদার এবং তার আপন চাচাতো তিন ভাইসহ ১৪ নেতাকর্মীদের নামে মামলা করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আবার ২৭ সেপ্টেম্বর বরিশালের মুলাদীতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগে ৮ বছর পর মামলা হয়। মামলার বাদীর অভিযোগ, প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হলেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ভয়ে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করায় তখন মামলা করতে পারেননি। এছাড়া ২০১৪ সালে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোটকেন্দ্র দখল, বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো, ব্যালটে সিল জালিয়াতিসহ নৈরাজ্য সৃষ্টির ঘটনায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বরিশাল সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান এবং রিটানিং কর্মকর্তাসহ ২৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর সমর্থক মনিরুজ্জামান জামাল। এছাড়া নভেম্বরে ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করে ফেরার পথে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদকে হত্যার উদ্দেশে গুলিবর্ষণ ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়।  

তবে এসবের মধ্যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে বছরজুড়ে দরিদ্র ও মধ্যবিত্তের নাভিশ্বাস। বিশেষ করে সয়াবিন তেল, ডিম, চাল, পেঁয়াজ, আলু, কাঁচামরিচ ও  সবজির বাজারদরের ঊর্ধ্বগতিতে হিমশিম খেতে হয়েছে। তবে প্রশাসনের নিয়মিত নজরদারিতে ডিসেম্বরের শেষ দিকে এসে চাল, পেঁয়াজ, আলু ও শীতকালীন সবজির দম কিছুটা কমায় বছর শেষে স্বস্তির কথা বলছেন নগরবাসী।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ
বছরজুড়ে শৈত্যপ্রবাহ, ঘূর্ণিঝড়সহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয় বরিশালবাসী। তবে এর মধ্যে ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় রিমাল সব থেকে বেশি ভুগিয়েছে দক্ষিণাঞ্চলবাসীকে। ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের সময় যে প্লাবন হয়েছে তা দক্ষিণাঞ্চলে এর আগে কখনও দেখা যায়নি। আবার ঘূর্ণিঝড় রিমালের মতো দীর্ঘসময় ঝড়ের তাণ্ডব দেখেননি তারা। এ ঝড় রাত কাটিয়ে গোটা দিনের অর্ধেকের বেশি সময় অর্থাৎ ১২-১৫ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে দক্ষিণাঞ্চলে প্রভাব খাটিয়েছে, যা সিডর, আইলা, নার্গিসের সময়ও এমনটা লক্ষ্য করা যায়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে এমনটা হচ্ছে।  

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপকূলীয় অধ্যয়ন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, গত ২০ বছর আগেও বর্ষার সময়েই ৮০ শতাংশ বৃষ্টিপাত হয়ে যেত। কিন্তু বর্তমান আমরা শীতকালেও বৃষ্টিপাত হতে দেখছি।  

তিনি আরও বলেন, বছরে মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে যে বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা তার ২০ শতাংশও হয়নি। তবে সংরক্ষণে থাকা শক্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে ঘূর্ণিঝড় রিমালে। ফলে ঝড়ের সময়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে ঝড়ের সময়ে স্বাভাবিক নিয়মে সাগরের পানি ফুলে-ফেঁপে ওঠে, তেমনি নদ-নদীতে জোয়ারের পানির উচ্চতা বেড়ে যায় এটাও ঠিক। এছাড়া বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ, হিজলা ও বাকেরগঞ্জের একাধিক এলাকা বছরজুড়ে নদী ভাঙনের শিকার হয়ে নিঃস্ব করেছে স্থানীয়দের।

নির্বাচন
এদিকে বছরের শুরুর ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনকে ঘিরে ২০২৩ সালের শেষ দিক থেকেই উত্তাপ ছিল বরিশালের বেশ কয়েকটি আসনে। যার মধ্যে বরিশাল-২, বরিশাল-৩, বরিশাল-৪, বরিশাল-৫ ও বরিশাল-৬ আসনে নিজ দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীদের হিমশিম খেতে হয় নির্বাচন নিয়ে। যেখানে বিএনপির ভোট বর্জনসহ অসহযোগ আন্দোলনের লিফলেট বিতরণ আরও গলার কাটা হয়ে দাঁড়ায় প্রার্থীদের। ধারাবাহিকতায় ৩ জানুয়ারি বরিশাল নগরের সদর রোডে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ভোট বর্জনসহ অসহযোগ আন্দোলনের লিফলেট বিতরণের সময় পুলিশের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে সেখান থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হোসেন খানসহ বিএনপির ৭ নেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আবার ওই ঘটনায় বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপিসহ ছাত্রদল, যুবদল এবং অঙ্গ সংগঠনের ৪৮ জন নামধারী এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২৪০ জনকে আসামি করে মামলাও করে পুলিশ। আর বিদ্রোহীদের দমাতে বরিশাল সদর আসনে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলা, বরিশাল-২ আসনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলা, ১২টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে ফেলার মতো ঘটনা ঘটিয়ে আলোচনার সৃষ্টি করেন নৌকার কর্মী-সমর্থকরা।  

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে যেন টার্গেটে পরিণত হয় সাংবাদিকরা। বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন একাধিক সংবাদকর্মী। ২ মে ঘটা ওই ঘটনায় গুরুতর অবস্থায় বেশ কয়েকজন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাও নিয়েছেন।

ক্যানসার জয়
ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে শিক্ষা জীবন থেকে দুই বছর হারিয়ে গেলেও থেমে থাকেনি বরিশালের জিলা স্কুলের ছাত্র মাহাথির রহমান। ব্লাড ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করে গেল এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে সে। এতে মাহাথিরের সঙ্গে পুরো পরিবারও খুশি। বরিশাল নগরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ড মুন্সির গ্যারেজ এলাকার বাসিন্দা সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী মফিজুর রহমান জামাল ও হোসনে আরা পলিন দম্পতির ছেলে মাহাথির রহমান।  

বাজুসের কার্যক্রম
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরের হাত ধরে নতুন করে সব জুয়েলারি ব্যবসায়ী ঐক্যবদ্ধ হন। সেই সঙ্গে নতুন উদ্যোমী বাজুসের নেতৃত্বে বিশ্ব কাঠামো মেনে ব্যবসার কথা ঘোষণা দেন তারা।

এছাড়া আগস্টে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে হামলা-ভাঙচুরের প্রতিবাদেও বরিশাল উত্তাল ছিল। প্রথমে ২০ আগস্ট প্রতিবাদে মানববন্ধন ও ২৫ আগস্ট বরিশালে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পরে ২৫ আগস্ট প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। যেখান থেকে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং সাংবাদিক সমাজের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। অপরদিকে কর্মস্থল বরিশালে অবস্থান করেও জাতীয় দৈনিকের প্রতিনিধি এম মিরাজ হোসেন, স্থানীয় দুটি পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মির্জা রিমন এবং এস এম জাকির হোসেন নভেম্বরের শেষে ঢাকার মামলার আসামি হয়ে মিডিয়া পাড়ায় আলোচনার সৃষ্টি করেছেন।

অপরদিকে বছরজুড়ে আলোচনার মধ্যে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবামেক) ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে বা গোপনে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড না চালানো এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র রাজনীতি বন্ধের ঘোষণা ছিল উল্লেখযোগ্য। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের পদত্যাগ, জেলা ও মেট্রোপলিটনের ওসিদের একযোগে বদলি, ডিজিদের বদলিসহ বিভিন্ন দপ্তর প্রধানের বদলি কার্যক্রমও ছিল আলোচনায়।

এছাড়া ১৭ বছর প্রথমবারের মতো জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা-আমির ডা. শফিকুর রহমান বরিশালে একাধিক পথসভা করে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশ উদ্দীপনার সৃষ্টি করেন।

এর আগে বছরের শুরুতে ৮ ফেব্রুয়ারি ১০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের দুটি ট্রাকভর্তি ভারতীয় শাড়ি, থ্রি-পিসসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাক জাতীয় দ্রব্য জব্দ করে কোস্টগার্ড আলোচনার সৃষ্টি করে। যদিও নৌ ও সড়ক পথে মাদক উদ্ধারেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ছিল বছরজুড়ে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪
এমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।