ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ পৌষ ১৪৩১, ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬ রজব ১৪৪৬

বসুন্ধরা শুভসংঘ

নতুন বই পেয়ে খুশি গাইবান্ধা শুভসংঘ স্কুলের শিশুরা

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০২৫
নতুন বই পেয়ে খুশি গাইবান্ধা শুভসংঘ স্কুলের শিশুরা

গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানিতে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে লণ্ডভণ্ড জনপদে শুভসংঘ স্কুলের শিশুদের জন্য রবিবার (৫ জানুয়ারি) ছিল অন্য রকম একটি দিন। হাতে নতুন বই পেয়ে আনন্দিত ছিল শিশুরা।

বই হাতে ছোটাছুটি দেখতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে রীতিমতো ভিড় জমে যায়। শিশুদের সঙ্গে তাদের মায়েদের মুখেও ছিল হাসি।

শিশু শ্রেণি থেকে সদ্য প্রথম শ্রেণিতে ওঠা মাহিমা জান্নাত ফোকলা হেসে বলল, ‘বই হাতোত পায়া খালি গন্ধ নিব্যা নাগছি। আইজ থেকিয়াই পড়া শুরু করমো। ’

কুয়াশা কাটতে কাটতে প্রায় সকাল সাড়ে ১১টা। সূর্যের আলো পড়ে শুভসংঘ স্কুলের সামনে খোলা মাঠজুড়ে উষ্ণতার ছোঁয়া।

সেখানে শিক্ষার্থী আর অভিভাবকদের খণ্ড খণ্ড ভিড়। জেলা শুভসংঘের বন্ধুরা সেখানে পৌঁছতেই মুহূর্তেই অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি সবাই। মাঠের এক প্রান্তে বিষণ্নমুখে দাঁড়িয়ে শিশু শ্রেণির ৩১ জন শিক্ষার্থী। তাদেরও বই বিতরণ আর অভিভাবক সমাবেশে ডাকা হলো।

তারা চারপাশ দিয়ে দাঁড়িয়ে। ছোট্ট রাহেলা আকতার মুখ বাঁকা করে বলল, ‘ওয়ান-টুর বই খালি আনছেন, হামাকেরে বই নাই ক্যা?’

শুভসংঘের কর্মীরা তাদের বুঝিয়ে বললেন, ‘এইতো আর কয়েকটা দিন, সরকার বই পাঠালেই তোমাদেরও বই দিতে আসব। ’

অনুষ্ঠান শুরু হয় জাতীয় সংগীতের সঙ্গে পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে। সারি সারি দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীরা শপথবাক্য পাঠ করল। কবিতা পাঠ, একটু গানের পর শুরু হলো বই বিতরণ।

শিশুদের হাতে বই তুলে দিলেন শুভসংঘের জেলা সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ বিপ্লব, আহসানিয়া স্নিগ্ধা, আলদিন আলিফ, স্কুলের শিক্ষক মোসা. নীলা আকতার, শারমিন খাতুন, অভিভাবক আসফি বেগম, তুষার মিয়া ও কালের কণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি অমিতাভ দাশ হিমুন।

অভিভাবক আসফি বেগম বললেন, ‘বিনা পয়সায় পড়ানো শুধু নয়, বসুন্ধরা গ্রুপ বাচ্চাদের বই, খাতা, কলম, ব্যাগ, পোশাক, জুতা কত কী দেয়। নদের পাড়ের মানুষের অভাবি জীবনে বড় বড় স্কুলে পড়ানো কঠিন ব্যাপার। শুভসংঘ স্কুল সেই সুযোগ করে দিয়েছে। আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। এখন আমরা চাই, এই স্কুলটাকে স্থায়ী রূপ দেওয়া হোক। ’

শিক্ষক শারমিন খাতুন বলেন, ‘দুস্থ পরিবারের শিশুদের জন্য এই স্কুলটি আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। বসুন্ধরা গ্রুপ তাদের জন্য শিক্ষার আলো পেতে যা যা করেছে সব কিছুর জন্য এলাকার মানুষ দোয়া করে। আমরা এই শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করতে পারছি ভেবে গর্ব বোধ করি। আলহামদুলিল্লাহ, এই কাজটিকে আমরা ব্রত হিসেবে নিয়েছি। ’

শুভসংঘের জেলা সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ বিপ্লব বলেন, ‘প্রায় তিন বছর হলো স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখন দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৮১ জন। শিক্ষক রয়েছেন দুজন। কেন্দ্রের নির্দেশে বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় স্কুলটি এখন অনেক পরিণত। এলাকায় সকলেই জানেন এখানে শিশুদের জন্য একটি ভালো মানের স্কুল স্থাপিত হয়েছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০২৫
নিউজ ডেস্ক 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।