ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ক্রিকেট

দাপুটে জয়ে সুপার লিগ নিশ্চিত টাইগার যুবাদের

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৬
দাপুটে জয়ে সুপার লিগ নিশ্চিত টাইগার যুবাদের ছবি: উজ্জ্বল ধর- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কক্সবাজার থেকে: যুব বিশ্বকাপের একাদশতম আসরের ১৪তম ম্যাচে বিশাল জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। স্কটল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে ১১৪ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে টাইগার যুবারা।

এ ম্যাচে জয়ের ফলে সুপার লিগ কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে স্বাগতিকরা।

কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টাইগারদের ছুঁড়ে দেওয়া ২৫৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে স্কটল্যান্ড স্বাগতিকদের বোলিং তোপে পড়ে ৪৭.২ ওভারে ১৪২ রান তুলতেই গুটিয়ে যায়।

সকাল নয়টায় শুরু হওয়া ম্যাচে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় স্কটিশরা। নাজমুল হোসেন শান্তর অনবদ্য শতকে ভর করে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল ৬ উইকেট হারিয়ে স্কটিশদের ২৫৭ রানের টার্গেট ছুঁড়ে দেয়। শান্ত অপরাজিত থেকে ১১৩ রানের ইনিংস খেলেন। এছাড়া টাইগারদের দলপতি মেহেদি হাসান মিরাজ ৫১ ও ওপেনার সাইফ হাসান ৪৯ রান করে দলের স্কোরে ভূমিকা রাখেন।

টাইগার যুবাদের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন সাইফ হাসান ও পিনাক ঘোষ।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বিদায় নেন পিনাক ঘোষ। মোহাম্মদ গাফফারের বলে এলবির ফাঁদে পড়ে শূন্য রানেই ফেরেন তিনি। অষ্টম ওভারের শেষ বলে গাফফারের দ্বিতীয় শিকারে ফেরেন ১৩ রান করা জয়রাজ শেখ।

দলীয় ১৭ রানের মাথায় দুই উইকেট হারানোর পর জুটি বাঁধেন সাইফ হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত। এ দুই টাইগার ব্যাটসম্যান স্কোরবোর্ডে আরও ১০১ রান যোগ করেন। দলীয় ১১৮ রানের মাথায় মিচেল রাওয়ের বলে বোল্ড হন সাইফ হাসান। টাইগার এ ওপেনার অর্ধশতক থেকে মাত্র এক রান দূরে থাকতে বিদায় নেন।

বিশ্বমঞ্চে টানা দ্বিতীয় অর্ধশতকের দেখা পান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান শান্ত। ৭১ বলে অর্ধশতকের দেখা পান তিনি। আর ১১১ বলে সেই অর্ধশতককে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে নিয়ে যান ইনফর্ম এই ব্যাটসম্যান। ক্যারিয়ারে ১৭০০ রানের পাশাপাশি যুবাদের ওয়ানডেতে এখন সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী শান্ত।

যুবাদের ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রানের মালিক হওয়ার হাতছানি নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন নাজমুল হোসেন শান্ত। যুব ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রান ছিল পাকিস্তানি ক্রিকেটার সামি আসলামের। ৪০ ম্যাচে পাকিস্তানের ওপেনার করেন ১৬৯৫ রান। ঠিক দ্বিতীয় অবস্থানেই ছিলেন নাজমুল। ৫৩ ম্যাচে তার ছিল ১৬৩৪ রান। সামিকে ছাড়িয়ে যেতে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এ ব্যাটসম্যানের প্রয়োজন হয় ৬২ রানের। ৩৮তম ওভারে চার হাঁকিয়ে তিনি এই রেকর্ডের মাইলফলক স্পর্শ করেন।

শান্তর দিনে অর্ধশতকের দেখা পান টাইগারদের দলপতি মেহেদি হাসান মিরাজ। ৪৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন তিনি। ৪৮ বলে ৫১ রান করে মোহাম্মদ গাফফারের তৃতীয় শিকারে বিদায় নেন মেহেদি। ইনিংসের ৪৮তম ওভারে আউট হওয়ার আগে মেহেদি চারটি বাউন্ডারি হাঁকান। শান্তর সঙ্গে ১০০ রানের জুটিও গড়েন টাইগার দলপতি।

দারুণ একটি শতক হাঁকিয়ে শান্ত ১১৩ রানে অপরাজিত থাকেন। ১১৭ বলে সাজানো ইনিংস তার ব্যাট থেকে আসে ১০টি বাউন্ডারি। শেষ দিকে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ৩ রান করে বিদায় নিলেও সাঈদ সরকার ১৬ রান করেন। তার ৬ বলের ইনিংসে ছিল একটি করে চার ও ছক্কা।

স্কটিশদের হয়ে ব্যাটিং শুরু করতে ওপেনিংয়ে নামেন ররি জন্সটন ও নেইল ফ্লাক। ইনিংসের ১৩তম ওভারে মেহেদি হাসান মিরাজ ব্যক্তিগত ২৮ রান করা ফ্লাককে ফিরিয়ে দেন। একই ওভারের শেষ বলে রান আউটের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন ওয়াইস শাহ।

ইনিংসের ১৯তম ওভারে আরিফুল ইসলাম ফেরান ওপেনার ররি জন্সটনকে। এলবির ফাঁদে পড়ে বিদায় নেওয়ার আগে স্কটিশ এই ওপেনার করেন ৫২ বলে ২০ রান।

ইনিংসের ২৯তম ওভারে আরিফুল ইসলাম তার দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন জ্যাক ওয়ালারকে ফিরিয়ে। ওয়ালার ২৪ রান করে শাওনের তালুবন্দি হয়ে ফেরেন। সাজঘরে ফেরার আগে আজিম দারকে সঙ্গে নিয়ে ৩৩ রান যোগ করেন ওয়ালার। ৩৮তম ওভারে স্কটিশ শিবিরে আঘাত হানেন সালেহ আহমেদ শাওন। ম্যাকক্রিথকে (৮) এলবির ফাঁদে ফেলেন তিনি।

৪০তম ওভারে শাওন তার দ্বিতীয় শিকার তুলে নিতে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন হারিস আসলামকে (২)। ৪২তম ওভারে তৃতীয় শিকার তুলে নেন শাওন। বোল্ড করে ফিরিয়ে দেন ২ রান করা রায়ান ব্রাউনকে। ৪৪তম ওভারে নিজের প্রথম উইকেটের দেখা পান সাইফুদ্দিন। হারিস কার্নেজিকে (১) বোল্ড করেন তিনি। এক ওভার পর আবারো বোলিং আক্রমণে এসে বোল্ড করে সাজঘরের পথ ধরান মিচেল রাওকে (২)।

শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে আজিম দার ৫০ রান করেন। তিনিও সাইফুদ্দিনের বলে বিদায় নেন।

টাইগারদের হয়ে সালেহ আহমেদ শাওন ১০ ওভার বল করে ২৭ রান খরচায় নেন তিনটি উইকেট। ১০ ওভারে ২৮ রানের বিনিময়ে আরও দুটি উইকেট দখল করেন আরিফুল ইসলাম। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ৭.২ ওভারে ১৭ রান খরচ করে পান তিনটি উইকেট। একটি উইকেট নেন মেহেদি হাসান মিরাজ।

এ ম্যাচে বাংলাদেশ একাদশে ছিলেন না স্পিনার সঞ্জিত সাহা। বোলিং অ্যাকশন নিয়ে আইসিসির আপত্তির কারণে তাকে এ ম্যাচে মাঠে নামায়নি টিম ম্যানেজমেন্ট। তার বদলি হিসেবে দলে আসেন আরিফুল হক।

‘এ’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করে মেহেদি হাসান মিরাজের দল। ৪৩ রানে প্রোটিয়াদের হারায় নাজমুল হোসেন শান্ত, পিনাক ঘোষ, সাঈদ সরকার, জয়রাজ শেখরা। অপরদিকে, স্কটল্যান্ডকে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারতে হয় নামিবিয়ার বিপক্ষে।

আগামী ০২ ফেব্রুয়ারি একই ভেন্যুতে নামিবিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামবে টাইগার যুবারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, ৩১ জানুয়ারি ২০১৬
এমআর

** জয় থেকে দূরে নেই স্বাগতিকরা
** স্কটিশদের পাঁচ ব্যাটসম্যান সাজঘরে
** ৩৬ ওভারে স্কটল্যান্ড ১০৯/৪
** ২৮ ওভার শেষে স্কটল্যান্ড ৮৮/৩
** স্কটিশদের তৃতীয় উইকেটের পতন
** স্কটিশ উইকেটের অপেক্ষায় টাইগাররা
** জয়ের লক্ষ্যে ফিল্ডিংয়ে টাইগার যুবারা
** টাইগার যুবাদের সংগ্রহ ২৫৬
**শান্তর দুর্দান্ত শতক, বাংলাদেশ ২২৬/৪
** ৪৭ ওভার শেষে বাংলাদেশ ২১৮/৩
** মাইলফলক স্পর্শ করলেন শান্ত
** সর্বোচ্চ রানের পথে নাজমুল শান্ত
** ৩১ ওভার শেষে বাংলাদেশ ১০৯/২
** বাংলাদেশের দুই উইকেটের পতন
** পিনাকের দ্রুত বিদায়

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।