ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ক্রিকেট

পুরুষের কান্নায় লজ্জা নেই: খোলা চিঠিতে শচীন

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৯
পুরুষের কান্নায় লজ্জা নেই: খোলা চিঠিতে শচীন বিদায়বেলায় অশ্রু ধরে রাখতে পারেননি শচীন/ছবি: সংগৃহীত

আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় পুরুষদের আবেগের বহিঃপ্রকাশকে একধরনের দুর্বলতা হিসেবে দেখা হয়। এমনকি জীবনের কঠিনতম মুহূর্তেও অনেক পুরুষ চোখের অশ্রু লুকিয়ে রাখেন। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেট কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকারের মতে, অশ্রু দেখানোয় লজ্জার কিছু নেই।

সম্প্রতি 'আন্তর্জাতিক পুরুষ সপ্তাহ’ উপলক্ষে সকল পুরুষদের উদ্দেশে খোলা চিঠি লিখেছেন শচীন। সেই চিঠিতে তিনি আবেগ ‘কান্না পুরুষদের দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ’ কথাটির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে লিখেছেন, ‘অশ্রু দেখানোয় লজ্জার কিছু নেই।

তাই যা আপনাকে শক্তিশালী বানায় সেটাকে লুকিয়ে রাখা কেন? কেন অশ্রু লুকিয়ে রাখতে হবে?’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমাদের এটা বিশ্বাস করানো হয় যে-পুরুষদের কাঁদতে নেই। কান্না পুরুষদের দুর্বল বানায়। আমিও এটা বিশ্বাস করতাম। আমি এই চিঠি লিখছি কারণ আমি এখন বুঝতে পারি যে আমি ভুল ছিলাম। আমার সংগ্রাম ও কষ্ট আমাকে আজকের অবস্থানে এনেছে। ’

তর্কসাপেক্ষে সর্বকালের সেরা এই ব্যাটসম্যান আরও লিখেছেন, ‘কষ্ট ও দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ অনেক সাহসিকতার ব্যাপার। কিন্তু বিশ্বাস করুন, এটা আপনাকে আরও শক্ত ও ভালো করে গড়ে তুলবে। তাই পুরুষ কী করতে পারবে আর পারবে না এসব ধরাবাঁধা বিষয় পেছনে ফেলার জন্য আহবান জানাচ্ছি। আপনি যেই হোন, যেখানেই থাকুন, কামনা করি আপনার যেন সেই সাহস হয়। ’

‘নিঃসন্দেহে, অনেক সময় আপনি হেরে যাবেন এবং কাঁদতে ইচ্ছা করবে। এটা হতে দিন। কিন্তু এসময় আপনি অশ্রু সংবরণ করবেন এবং শক্ত হওয়ার ভান করবেন। কারণ পুরুষরা এটাই করে,’ লিখেছেন ৪৬ বছর বয়সী সাবেক ক্রিকেটার।

নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শেষদিনের কথা স্মরণ করে শচীন বলেন, বিদায়ী ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি আবেগ সংবরণ করতে না পেরে কেঁদে ফেলেন।  

তিনি লিখেছেন, ‘আমি এটা (বিদায়) নিয়ে অনেক আগে থেকেই ভাবছিলাম কিন্তু শেষ সপ্তাহে প্যাভিলিয়নের পথে ফেরার সময় কিছুই কাজে লাগেনি। প্রতিটি পদক্ষেপে আমি ডুবে যাচ্ছিলাম বলে অনুভব হচ্ছিল। সব শেষ হয়ে যাচ্ছে ভেবে আমার গলা ধরে আসছিল। ওই সময় আমার মাথায় অনেক কিছু ঘোরপাক খাচ্ছিল। ' 

চিঠির শেষে এই ‘লিটল মাস্টার’ লিখেছেন, ‘আমি নিজেকে দমিয়ে রাখতে পারছিলাম না। এবং আমি তা করিওনি। আমি পুরো দুনিয়ার সামনে এটাকে (আবেগ) উন্মুক্ত করে দিলাম এবং অবাক করা বিষয় হলো, আমার নিজেকে অনেক হালকা লাগছিল। আমি শান্তি অনুভব করছিলাম। আমি যা অর্জন করেছি তা নিয়ে বাধিত ছিলাম। আমি নিজেকে একজন যথার্থ পুরুষ হিসেবে অনুভব করছিলাম। '

বাংলাদেশ সময়: ২০২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৯
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।