ঢাকা: বুধবার রাত ২টায় সাও পাওলোর অ্যারেনা দে সাও পাওলো স্টেডিয়ামে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে নামছে আর্জেন্টিনা ও নেদারল্যান্ডস।
এই ম্যাচের ফলাফলের ওপরই নির্ভর করছে বিশ্বকাপের বিংশ আসর কি অল ইউরোপিয়ান হবে, নাকি ইউরোপিয়ান-লাতিন।
ইতোমধ্যেই ব্রাজিলকে বিধ্বস্ত করে ফাইনালে প্রতিদ্বন্দ্বীর জন্য অপেক্ষা করছে ইউরোপীয় জায়ান্ট জার্মানি। বুধবার রাতের এ লড়াইয়ে জয়ী দলটিই আগামী ১৩ জুলাই রিওডি জেনিরোর মারাকানা স্টেডিয়ামে নামবে তিনবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে।
এই ম্যাচে কাগজে-কলমে খানিকটা এগিয়ে থাকছে টোটাল ফুটবলের জনকরা। ইতিহাসও তাদের পক্ষেই কথা বলছে। তবে বিশ্বকাপ মিশনে যখন আর্জেন্টাইন শিবিরে লিওনেল মেসির মতো ফুটবলার রয়েছেন তখন তাদেরও ছেড়ে কথা বলা যাচ্ছে না।
পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলা অ্যারিয়েন রোবেনের দল পুরো ছন্দে থাকলেও ইনজুরি আতঙ্ক রয়েছে আর্জেন্টিনা শিবিরে। গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচেই ইনজুরির কারণে আক্রমণভাগ থেকে সার্জিও আগুয়েরোকে হারায় দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। তবে মেসি-ডি মারিয়া-হিগুয়েনদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা তার অনুপস্থিতি বুঝতে দেয়নি।
কিন্তু সর্বশেষ বেলজিয়ামের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে উরুতে আঘাত পান আর্জেন্টিনার মধ্যমাঠের প্রাণভোমরা উইঙ্গার ডি মারিয়া। নকআউটের এই গোলদাতা বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ায় মাঝমাঠের রণকৌশল নতুন করেই সাজাতে হচ্ছে আর্জেন্টিনাকে।
শোনা যাচ্ছে ইনজুরি কাটিয়ে সেমিফাইনালে ফিরতে পারেন আগুয়েরো। সেক্ষেত্রে ডি মারিয়ার বিয়োগের সঙ্গে আগুয়েরো যোগের আশার বাণী পাচ্ছে লাতিন আমেরিকান শিবির। আক্রমণভাগে আগুয়েরোর প্রত্যাবর্তন মেসির ওপর খানিকটা চাপ কমালেও মধ্যমাঠে নেমে এসে বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে হতে পারে আর্জেন্টাইন অধিনায়ককে।
ফাইনালে ওঠার ইউরোপীয় গতি আর লাতিন আমেরিকান ছন্দের ফুটবলের এ লড়াইয়ে ব্যক্তিগত প্রতিযোগিতা জমবে মেসি ও রোবেনের মধ্যে। দু’জনই গোল্ডেন বুট জেতার দৌঁড়ে এগিয়ে আছেন। মেসির চারটি গোলের পিছু পিছু রয়েছে রোবেনের তিন গোলের দৌঁড়। দু’দলের বিশ্বকাপের বাজির ঘোড়া মূলত এ দু’জনই। তাই বুধবার রাতে স্বাভাবিকভাবেই ‘ভিনগ্রহের মেসি’ আর ‘তিন ফুসফুসের রোবেনের’ ঝলক দেখতে মুখিয়ে থাকবেন দলের সমর্থকরা।
ফাইনাল নিশ্চিতের লক্ষ্যে আর্জেন্টিনার পক্ষে মাঠৈ নামতে পারেন- সার্জিও রোমেরো (গোলরক্ষক, ১), এজেকুয়েল গ্যারি (২), পাবলো জাবালেটা (৪), লুকাস বিগলিয়া (৬), সার্জিও আগুয়েরো (২০), গঞ্জালো হিগুয়েন (৯), লিওনেল মেসি (অধিনায়ক, ১০), জাভিয়ার মাসেরানো (১৪), এজেকুইয়েল ল্যাভেজ্জি (২২), হোসে বসন্ত (২৩), মার্টিন ডেমিচেলিস (১৫)।
কোচ: আলেসান্দ্রো সাবেলা।
অপরদিকে ডাচদের পক্ষে মাঠে নামতে পারেন-জেসপার সিলেসেন (গোলরক্ষক, ১), রন ভলার (২), স্টেফেন ডি ভ্রিজ (৩), ব্রুনো মার্টিন্স ইন্ডি (৪), ড্যালে ব্লিন্ড (৫), ওয়েসলি স্নেইডার (১০), অ্যারিয়েন রোবেন (১১), রবিন ফন পার্সি (৯), ডির্ক কুয়েট (১৫), জেওরজিনিও উইজনালডাম (২০), ম্যাম্পিস (২১)।
কোচ: লুই ফন গাল (নেদারল্যান্ডস)
এর আগে, দু’দলের ৮ বারের লড়াইয়ে চারবার জিতেছিল নেদারল্যান্ডস, মাত্র একবার শেষ হাসি হেসেছিল লাতিন আমেরিকানরা। তিনবার ড্র’তে হয়েছিল মীমাংসা।
তবে সেমিফাইনাল বলে আর্জেন্টিনার আশার বাণী হলো, এর আগে চারবারের শেষ চারের লড়াইয়ে ভাগ্য প্রতারণা করেনি ম্যারাডোনা-মেসিদের দলের সঙ্গে, অর্থাৎ চারবারই জিতেছে আর্জেন্টিনা। এর মধ্যে দুইবার আবার শিরোপাও ঘরে তুলে নেয় লাতিন অামেরিকান পরাশক্তি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০১৪