দুই বছর পরপর বিশ্বকাপ আয়োজনে উঠেপড়ে লেগেছে ফিফা। এরইমধ্যে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক এই সংস্থা ফেডারেশনগুলোর সঙ্গে আলোচনাও অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে গেছে।
ফিফার শীর্ষ সম্মেলনে সদস্য দেশগুলোকে এমনটাই জানানো হয়েছে। এই সম্মেলনে আর্সেনালের সাবেক কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গারের প্রস্তাবিত দ্বিবার্ষিক বিশ্বকাপ নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন ২১১ সদস্য দেশের প্রতিনিধিরা। তবে ইউরোপীয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা, ইউরোপ এবং দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল ও দক্ষিণ আমেরিকার শীর্ষ লিগগুলোর পক্ষ থেকে এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করা হয়। তবে আফ্রিকান ফুটবলের শীর্ষ সংস্থা কাফ প্রস্তাবের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
ফিফার সদস্য দেশগুলোকে জানানো হয়েছে, দুই বছর পরপর বিশ্বকাপ আয়োজন করলে মিডিয়া স্বত্ব এবং স্পনসরশিপ থেকে আয়ের পরিমাণ ৭০৯ কোটি ডলার থেকে বেড়ে প্রায় ১১ শ ৫১ কোটি ডলারে দাঁড়াবে। ২০৩০ সাল থেকে শুরু করে পরবর্তী ৪ বছরে দুই বিশ্বকাপ আয়োজন করলে এমন আয় বৃদ্ধির সম্ভাব্য হিসাব দেখিয়েছে ফিফা। তবে ওই সময়ে দুই বিশ্বকাপ হতে পারে ৪৫ দলের। ওয়েঙ্গার চান ধনী ও দরিদ্র ফেডারেশনগুলোর মধ্যে পার্থক্য কমিয়ে আনতে। এজন্য বাড়তি আয় তাদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
ফিফা গ্লোবাল সামিটে ২১১টি ফেডারেশনের জন্য লোভনীয় প্রস্তাব দিয়েছে ফিফা। ওই সামিটে ২১০ ফেডারেশনের মধ্যে ২০৭ সদস্য উপস্থিত ছিল। সেখানেই ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেন, 'নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ আমাদের পরামর্শ দিয়েছেন দুই বছর পরপর বিশ্বকাপ আয়োজন করলে প্রথম ৪ বছরে ৪৪০ কোটি ডলার বেশি আয় বাড়বে। এই তহবিল ২১১ সদস্যের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে। '
ইনফান্তিনো জানান, বর্তমানে প্রতি চক্রে ফেডারেশনগুলো ৬০ লাখ ডলার পায়। এই বাড়তি অর্থের ফলে সেটা বেড়ে প্রায় ২ কোটি ৫ লাখ ডলার বা ২১৪ কোটি টাকা হবে। ফিফার পরিচালনা নীতি অনুযায়ী বণ্টনে কমবেশি হতে পারে। সব সদস্যের মধ্যে বণ্টনের জন্য ৩৫০ কোটি ডলারের একটি আলাদা তহবিল গঠন করা হবে। এতে প্রতিটি সদস্য গড়ে ১৬০ কোটি ডলার পাবে।
এদিকে ওয়ার্ল্ড লিগ ফোরাম কর্তৃক প্রকাশিত এক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, দ্বিবার্ষিক বিশ্বকাপ আয়োজন করলে ঘরোয়া লিগগুলো এবং উয়েফার আয় কমে যাবে অনেক। তাদের দাবি, টিভি স্বত্ব এবং বিজ্ঞাপনের চুক্তি হারানোর কারণে সেই ক্ষতির পরিমাণ হতে পারে প্রায় ৯১০ কোটি ডলার। অন্য এক রিপোর্টে উয়েফা দাবি করেছে, ইউরোপের জাতীয় ফেডারেশনগুলোর আর্থিক ক্ষতি হতে পারে আড়াই থেকে ৩০০ কোটি ইউরো। কিন্তু ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার ফেডারেশনগুলোর বাইরে বাকিরা ঠিকই ফিফার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২১
এমএইচএম