ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সালিশ বৈঠকে গৃহবধূকে নির্যাতন, ইউপি সদস্যসহ গ্রেপ্তার ৪

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২৩
সালিশ বৈঠকে গৃহবধূকে নির্যাতন, ইউপি সদস্যসহ গ্রেপ্তার ৪

চাঁদপুর: চাঁদপুরের কচুয়ায় স্বামীর মৃত্যুর পর দ্বিতীয় বিয়ে করার অপরাধে সালিশ বৈঠকে জনসম্মুখে আকলিমা বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনায় ইউপি সদস্যসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে কচুয়া থানা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে গ্রেপ্তারদের চাঁদপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে বুধবার (০৯ আগস্ট) দিনগত রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন- উপজেলার সিংআড্ডা গ্রামের ইউপি সদস্য ফরিদ আহমেদ (৩৫), জসিম উদ্দিন (৪৫), আনোয়ার হোসেন (৫০) ও নবীর হোসেন (৪০)।

নির্যাতনের এমনি একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় তা ভাইরাল হয়। গৃহবধূকে নির্যাতন করার সময় এক যুবক তার ফোনে ভিডিও ধারণ করে স্থানীয় এক সংবাদকর্মীকে দিলে তিনি তার ফেসবুকে সেটি পোস্ট করেন। পরে ২৭ সেকেন্ডের ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওতে দেখা যায় স্থানীয় ইউপি সদস্য ফরিদ আহমেদের উপস্থিতিতে আলমগীর হোসেন নামে এক যুবক গৃহবধূ আকলিমাকে দেশীয় লাঠি (মোত্রা) দিয়ে পিঠে উপর্যিপুরি মারধর করছেন। আশপাশের দুই-একজন বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাতে পাত্তা না দিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হয়। পেটানোর সময় দুইটি মোত্রা ভেঙে গেলে আলমগীর চেয়ার দিয়ে পেটাতে আসেন।

ভিডিওটি ভাইরাল হলে অভিযুক্তদের শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন পোস্টে কমেন্ট করা ব্যক্তিরা। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কচুয়া থানায় মামলা করেন গৃহবধূ আকলিমা।

কচুয়া থানার মামলার বিবরণ ও গৃহবধূ আকলিমা জানান, উপজেলার সিংআড্ডা গ্রামের মজুমদার বাড়ির আব্দুর রহিমের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ২০১৪ সালে তার স্বামীর মৃত্যু হয়। গত ৪ আগস্ট একমাত্র মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে একই গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ির আলমগীর হোসেকে বিয়ে করেন আকলিমা। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে বুধবার (০৯ আগস্ট) কচুয়া উত্তর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ফরিদ আহমেদের বাড়িতে সালিশ বৈঠক বসে। সালিশ বৈঠকে আকলিমার প্রথম পক্ষের ভাশুর আনোয়ারের ছেলে আলমগীর সালিশ চলাকালীন সময়ে প্রকাশ্যে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। পরে আকলিমার পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করান।

কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইব্রাহীম খলিল জানান, ঘটনার দিন রাতে থানায় অভিযোগ করলে থানা পুলিশ তাৎক্ষণিক ইউপি সদস্য ফরিদ আহমেদ ও তার ভাই জসিমসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তারদের প্যানেল কোড সংশ্লিষ্ট ধারায় বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে চাঁদপুরের জেল হাজতে পাঠানো হয়। মামলার প্রধান অভিযুক্ত আলমগীর হোসেন পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তাকে ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২৩
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।