ঢাকা, শুক্রবার, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২৭ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

যমুনার পূর্বপাড়েও ভাঙন, ২ সপ্তাহে শতাধিক বাড়ি বিলীন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৭ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০২২
যমুনার পূর্বপাড়েও ভাঙন, ২ সপ্তাহে শতাধিক বাড়ি বিলীন নদী ভাঙন

সিরাজগঞ্জ: পশ্চিম তীরের পাশাপাশি যমুনা নদীর পূর্বপাড় সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলাতেও শুরু হয়েছে ভয়াবহ ভাঙন। তীব্র ভাঙনে গত দুই সপ্তাহে অন্তত শতাধিক বাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে।

পাশাপাশি কয়েকশ বিঘা ফসলি জমিও বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে নদী তীরবর্তী অন্তত ৬টি গ্রামের হাজারো মানুষ।  

শুক্রবার (২৭ মে) খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে যমুনা নদীর পানি বাড়া-কমার সঙ্গে সঙ্গে চৌহালীর দক্ষিণ অংশে চলছে ভাঙন। এতে বাঘুটিয়া ইউনিয়নের রেহাই পুখুরিয়া, চর নাকালিয়া, চর বিনানুই ও চর সলিমাবাদ এবং উমারপুরের ইউনিয়নের ধুপুলিয়া ও হাফানিয়া গ্রামের একশরও বেশি বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৫ বছর ধরে ভাঙনের কবলে রয়েছে এ অঞ্চলটি। এতে ৬/৭টি গ্রামের হাজার হাজার ঘরবাড়ি, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, তাঁত কারখানা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এ বছর বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই শুরু হয়েছে ভাঙন। দুই সপ্তাহে এ অঞ্চলের শতাধিক বাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে, বিলীন হয়েছে শত শত বিঘা ফসলি জমি। হুমকির মুখে রয়েছে চরসলিমাবাদ শত বছরের কবরস্থান, চৌবাডিয়া কারিগরি কলেজ, পয়লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পয়লা বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়সহ ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান. ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাটসহ বহু স্থাপনা।  

ভাঙন কবলিতদের দাবি ত্রাণ নয়, বাঁধ নির্মাণ করে চৌহালীবাসীকে রক্ষা করা হোক। বাঁধ নির্মাণ করে চৌহালী উপজেলার প্রায় ৩০টি গ্রামসহ হাজার মানুষর বসতভিটা ও ফসলি জমি রক্ষার দাবি জানান তারা।  

বাঘুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম মোল্লা বলেন, এ বছর বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই ভাঙন শুরু হয়েছে। আমার ইউনিয়নের ১, ২, ৩ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চারটি গ্রামে ব্যাপক ভাঙনে শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিওব্যাগ ফেলে কিছুটা ভাঙন নিয়ন্ত্রণ করলেও এ অঞ্চলকে রক্ষায় খুব শিগগিরই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা দরকার।  

চৌহালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক সরকার বলেন, ভাঙনের কবলে পড়ে চৌহালি উপজেলার মানুষ একের পর এক নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। দীর্ঘদিন ধরে দফায় দফায় ভাঙনে উপজেলা পরিষদ, থানাসহ সরকারি সব স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ বছরও বাঘুটিয়া ইউনিয়নে ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। বিষয়টি আমরা পাউবোকে জানিয়েছে। পাউবো অস্থায়ীভাবে জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।  

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, চৌহালীতে দেড় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন রয়েছে। নদীর পানি বাড়ার কারণে ওই ভাঙনটা শুরু হয়। ভাঙনরোধে বালু ভর্তি জিওব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে। এ মৌসুমে আপদকালীন ব্যবস্থা হিসেবে সেখানে ইতোমধ্যে ৪০ হাজার জিওব্যাগ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরপর আরও দেওয়া হবে। নদীর পানি কমতে থাকায় ভাঙন অনেকটা কমে আসছে বলে তিনি জানান।  

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।