ব্রাহ্মণবাড়িয়া: কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হাওরবেষ্টিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রতিদিনই বাড়ছে প্লাবিত হওয়া এলাকার সংখ্যা।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দিন দিন উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৩০ কিলোমিটার আধাপাকা-পাকা সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলার প্রায় ৭০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চারপাশে পানি উঠেছে। বেশ কিছু স্কুলেও পানি ঢুকেছে। এতে করে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষা অফিস থেকে কোনো আদেশ না পাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে পানি ভেঙে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাচ্ছেন। বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ খাবার পানি, গো-খাদ্যসহ শুকনো খাবারের সংকট দেখা দিচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বাড়ি-ঘর তলিয়ে যাওয়ার ভয়ে মানুষের মধ্যে শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- উপজেলার বুড়িশ্বর, কুন্ডা, ভলাকুট, গোয়ালনগর, ধরমণ্ডল, গোকর্ণ ও চাপরতলা ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এছাড়া উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের শ্রীঘর এসএসডিপি উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ৬৯টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. ইকবাল মিয়া বলেন, উপজেলার ১২৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৭০টি বিদ্যালয়ের চারপাশে পানি উঠেছে। কিছু বিদ্যালয়ের ভেতরেও পানি ঢুকেছে। স্কুল বন্ধ করার জন্য সরকারিভাবে নির্দেশনা আসেনি। আদেশ এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার আবু সাঈদ তারেক বলেন, বন্যায় উপজেলার প্রায় ৩ হাজার হেক্টর বোনা আমন জমির সব ধান পানির নিচে এবং ১ হাজার হেক্টর জমির আংশিক ধান তলিয়ে গেছে। তাছাড়া ৮ হেক্টর শাক-সবজির জমিও তলিয়ে গেছে। তিনি বলেন, দ্রুত পানি নেমে গেলে ধানের কোনো ক্ষতি হবে না।
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোনাব্বর হোসেন বলেন, বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা অবনতি হয়েছে। আমরা প্রতিদিন বন্যা কবলিত এলাকায় যাচ্ছি। এখন পর্যন্ত আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ৬৯টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২৪৩ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২২
আরএ