ঢাকা, শুক্রবার, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২৭ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

জঙ্গলে মিলল পুঁতে রাখা গৃহবধূর মরদেহ

ডিস্টিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২২
জঙ্গলে মিলল পুঁতে রাখা গৃহবধূর মরদেহ প্রতীকী ছবি

শেরপুর: শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে নিখোঁজ হওয়ার পাঁচদিন পর জঙ্গলে মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় মিলল নাছিমা বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূর অর্ধগলিত মরদেহ।

বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) উপজেলার বিশগিরিপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নাছিমা ওই উপজেলার কাকরকান্দি ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ ও পূর্ব মানিককুড়া গ্রামের বাসিন্দা আমির আলীর স্ত্রী।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, গত শনিবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যার দিকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন গৃহবধূ নাছিমা। সেদিন রাতে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা স্বজনদের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করে। কোথাও না পেয়ে নালিতাবাড়ী থানায় রোববার (২১ আগস্ট) নিখোঁজ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি (ডিজি) করেন স্বামী আমির আলী।
 
এদিকে নাছিমাকে বিভিন্ন স্থানে খুঁজে ব্যর্থ হয়ে ২৫ আগস্ট সকালে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে বিশগিরিপাড়া বন বিভাগের সমতল বনে-জঙ্গলে সন্ধানে নামেন স্বজনরা। সে সময় জঙ্গলের ওপরে কাকের ডাকাডাকি শুনে এগিয়ে যান নাছিমার মা গুলেরা বেগম। ঝোঁপের মধ্যে মাটি ফুঁড়ে বেড়িয়ে থাকা শেয়ালে কামড়ে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় মেয়ের অর্ধগলিত মরদেহ দেখে আঁতকে উঠেন তিনি। তার ডাক-চিৎকারে ছুটে আসেন অন্যরাও। খবর পেয়ে জেলা সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আফরোজা নাজনীনসহ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে মাটিতে পুঁতে রাখা গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধারে আসে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা।

নাছিমার স্বামী আমির আলী জানান, গত ২০ আগস্ট সারাদিন সংসারের কাজ শেষে সন্ধ্যার আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন নাছিমা। মাথায় সামান্য সমস্যা থাকায় প্রায়ই বাড়ি থেকে বেরিয়ে নাছিমা আশপাশে যেতেন বলেও জানান তিনি। কিন্তু শনিবার বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি নাছিমা। নিখোঁজ হওয়ার পাঁচদিন পেরিয়ে যাওয়ায় প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে বিশগিরিপাড়া বনের দিকে যেতে দেখেছেন শুনে বৃহস্পতিবার বিশগিরিপাড়া বনে তল্লাশী গেলে মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় নাছিমার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নাছিমার বাবা নাদির আলী জানান, আমিরের প্রথম এবং দ্বিতীয় স্ত্রী একটি করে দুইটি সন্তান রেখে মারা যান। তৃতীয় স্ত্রী প্রথম সন্তান নিয়ে ঢাকায় থাকেন। আমিরের চতুর্থ স্ত্রী তার মেয়ে নাছিমা এবং এ ঘরে পাঁচ সন্তানের জন্ম হয়েছে। এর মধ্যে বেঁচে আছে চার সন্তান। বিয়ের পর থেকেই তার মেয়ে এবং জামাতাসহ নাতিরা খুব সুখে আছেন। ধারণা করা হচ্ছে, বনের আশপাশে থাকা কোনো অপরাধী চক্র নাছিমাকে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে রেখেছে।

স্থানীয় এবং পাশাপাশি দুই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম খোকা ও নিয়ামুল কাউসার জনান, এ বনের ভেতরে একাধিক জায়গায় জুয়া এবং গাঁজার আসর বসে। ফলে এখানে অপরাধীদের আনাগোনা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই অপরাধীরা এমন ঘটনা ঘটাতে পারে।  

এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক জানান, হত্যাকাণ্ডের কারণ ও অপরাধী শনাক্তে অনুসন্ধান চলছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১১২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২২
এসআরএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।